Saturday 27 March 2010

সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ খাতের ২০০ কোটি টাকার ভাগ-বাটোয়ারা চূড়ান্ত

Manobzamin | Sunday, 28 March 2010
দীন ইসলাম:
দেশের বিভিন্ন জায়গায় তৈরি করা রাস্তা রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে। ফেটে যাওয়া জায়গায় প্রলেপ দেয়া হবে। এজন্য বর্তমান অর্থবছরের শেষ দিকে সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ খাতের প্রায় ২০০ কোটি টাকা ভাগ-বাটোয়ারার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করেছে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়। এজন্য তড়িঘড়ি করে দরপত্র প্রক্রিয়া শেষ করা হচ্ছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে দরপত্রের সব কাজ শেষে কার্যাদেশ দেয়া হবে। যোগাযোগ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, পিরিয়ডিক মেইনটেন্যান্স প্রোগ্রামের আওতায় সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ খাতে এ বছর জিওবি বাবদ ১৯০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
দরপত্র প্রক্রিয়া, মূল্যায়ন কমিটির প্রতিবেদন শেষে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীর সুপারিশ ও মন্ত্রণালয়ের আনুষঙ্গিক কাজ শেষ হয়েছে। এখন সরকারি ক্রয় সংক্রানত্ম মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদন বাকি রয়েছে। গত ১৫ই মার্চ মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদন চেয়ে একটি প্রসত্মাব মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠিয়েছে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সড়ক ও রেলপথ বিভাগ। ওই কমিটির অনুমোদন মিললেই ঠিকাদারদের কার্যাদেশ দেবে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর। অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, রাসত্মা রড়্গণাবেড়্গণে অতীত অভিজ্ঞতা নেই এমন কোম্পানিগুলোর বিপরীতে কার্যাদেশ দেয়ার সুপারিশ করেছে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়। এজন্য নানা কাহিনী চালু হয়েছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরে। ওদিকে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের মূল্যায়ন কমিটি দু’টি কোম্পানির দরপত্র দলিল বাতিল করলেও (নন-রেসপনসিভ) নানা অজুহাতে বাতিল দুই কোম্পানিকেই কাজ দেয়ার সুপারিশ করেছে মন্ত্রণালয়। এজন্য বাদ পড়েছে যোগ্য বিবেচিত কোম্পানিগুলো। অভিযোগ রয়েছে, যোগাযোগমন্ত্রীর এক আত্মীয়, এক হুইপের ভাই ও কয়েকজন প্রভাবশালী ঠিকাদার সড়ক রড়্গণাবেড়্গণ কাজের দরপত্রের দফারফা করছেন। এ সিন্ডিকেটের চাপাচাপিতেই রড়্গণাবেড়্গণ খাতের অর্থ খরচের জন্য তড়িঘড়ি করে দরপত্র আহবান করা হয়। দরপত্র জমা দেয়ার পরই ভাগবাটোয়ার চূড়ানত্ম প্রক্রিয়া শুরম্ন হয়। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো সারসংড়্গেপ সূত্রে দেখা গেছে, ১১টি কোম্পানিকে প্রায় দু’শ’ কোটি টাকার কাজ দেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে মেসার্স ইসমাইল হোসেন (তিনটি প্যাকেজ), ইন্ট্রাকো (বিডি) এসোসিয়েটস লিমিটেড, ডবিস্নউজিএমইসি-আরসি জেভি, পূবালী কস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড, সিপিসি- ডিয়ানকো জেভি, আইসিসি লিমিটেড (দুটি), টিএসএল-আরআইবি জেভি, এসইএল- এমএসএ জেভি, এমএম বিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড, মেসার্স পপুলার আজাজ আনোয়ার জেভি ও মেসার্স মো. মাহফুজ খানকে (দু’টি প্যাকেজ) কার্যাদেশ দেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে ১৫টি প্যাকেজের বিপরীতে ১৮৭ কোটি ৯৪ লাখ ৬৯ হাজার ২৮৪ দশমিক ৫৮ কোটি টাকার কার্যাদেশ দেয়ার সুপারিশ করেছে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়। এর আগে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি ১৫টি প্যাকেজের বিপরীতে ১৯১ কোটি ৯৬ লাখ ৩৩ হাজার ৩২৪ টাকার কার্যাদেশ দেয়ার সুপারিশ করে। মূল্যায়ন কমিটির সুপারিশ করা ওরিয়েন্ট ট্রেডিং অ্যান্ড বিল্ডার্স লিমিটেডের দু’টি প্যাকেজের কাজ ও সিপিসি-ডিয়ানকো জেভির দরপ্রসত্মাব বাতিল করে দিয়েছে মন্ত্রণালয়। এর বদলে মেসার্স পপুলার আজাজ আনোয়ার জেভিকে একটি ও মেসার্স মো. মাহফুজ খানকে দু’টি প্যাকেজের কাজ দেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। তিন প্যাকেজের জন্য সাড়ে ২৪ কোটি টাকার সবচেয়ে বড় কাজ দেয়া হচ্ছে এ দুই কোম্পানিকে। বাতিল করা কোম্পানিগুলোর ড়্গেত্রে বলা হয়েছে, সাধারণ মেরামত কাজের জন্য ওইসব কোম্পানির নির্ধারিত অভিজ্ঞতা নেই। এজন্য তাদের দরপত্র বাতিল করা হয়েছে। এর আগে গত বছরের ৬ই অক্টোবর উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে সড়ক রড়্গণাবেড়্গণ কাজের দরপত্র আহ্বান করা হয়। ১০ই ডিসেম্বর ওই দরপত্র জমা দেয়ার শেষ দিন ধার্য করা হয়। শেষ দিনে ১৫টি প্যাকেজের বিপরীতে ১০২টি দরপত্র পাওয়া যায়। এরপর ১৩ই ডিসেম্বর দরপত্র মূল্যায়ন শুরম্ন করে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের মূল্যায়ন কমিটি। এরপর অতি দ্রম্নততায় যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে ১৭ই ডিসেম্বর মূল্যায়ন প্রতিবেদন জমা দেয় কমিটি। মূল্যায়ন কমিটি দরপত্রদাতাদের দাখিল করা ১০২টি দরপত্রের মধ্যে ৯২টি দরপত্র গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচনা করা হয়। এছাড়া নয়টি দরপত্র অগ্রহণযোগ্য ও একটি দরপত্র ডিসকোয়ালিফাই করা হয়। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো সারসংড়্গেপে বলা হয়েছে, বিভিন্ন অঞ্চলের সড়কে পিরিয়ডিক মেইনটেন্যান্স প্রোগ্রামের আওতায় নিয়মিতভাবে রড়্গণাবেড়্গণ কাজ করা হয়। দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা সুষ্ঠু ও গতিশীল রাখার জন্য সড়কের পিরিয়ডিক মেইনটেন্যান্স কাজ করা একানত্ম প্রয়োজন। ২০০৯- ২০১০ অর্থবছরে পিরিয়ডিক মেইনটেন্যান্সের আওতায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সড়কগুলোর রড়্গণাবেড়্গণের জন্য ১৫টি প্যাকেজের মাধ্যমে ৪৯৯ দশমিক ২৫ কিলোমিটার সড়ক মেরামত করা হবে। এ কাজ বাংলাদেশ সরকার এবং জেডিসিএফের অর্থায়নে শেষ করা হবে। চলতি অর্থবছর পিরিয়ডিক মেইনটেন্যান্স খাতে জিওবি বাবদ ১৯০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। জেডিসিএফ উৎস থেকে ১৫০ কোটি টাকা সংশোধিত বাজেটে পাওয়া যাবে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে। তাই এ ক্রয় প্রসত্মাবে কোন বিদেশী অর্থ নেই।
http://www.mzamin.com/index.php?option=com_content&task=view&id=9500&Itemid=83

No comments:

Post a Comment