Thursday, 11 March 2010
ইউনিয়ন পরিষদের জমিতে ঘর করছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি
শেরপুরের মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরের জায়গা দখল করে ঘর তুলছেন চেয়ারম্যান। ছবি : কালের কণ্ঠ
Kalerkantho ঢাকা, শুক্রবার, ২৮ ফাল্গুন ১৪১৬, ২৫ রবিউল আউয়াল ১৪৩১, ১২ মার্চ ২০১০
ইউনিয়ন পরিষদের জমিতে ঘর করছেন চেয়ারম্যান জে এম রউফ, বগুড়াবগুড়ার শেরপুর উপজেলার মির্জাপুর বাজার এলাকায় ৫০ শতাংশ জায়গার ওপর তৈরি হচ্ছে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স। নির্মাণশৈলীর অংশ ভবনের পাশে দুই শতাংশের কিছু বেশি জায়গা ফাঁকা রাখা হয়েছে। গত সোমবার (৮ মার্চ) থেকে ওই জায়গায় ঘর তুলতে শুরু করেছেন ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী মুন্টু। তিনি একই সঙ্গে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি।
ইউনিয়ন পরিষদের ওই জমিতে ঘর তোলার কথা চেয়ারম্যান স্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, 'অন্যরা যাতে দখল করতে না পারে, সে জন্য আমি ঘর তুলে জায়গাটি রক্ষা করেছি।' গতকাল বৃহস্পতিবার সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, কয়েকজন শ্রমিক ইট-সিমেন্ট দিয়ে একটি ঘর তৈরি করছেন। ইতিমধ্যে তাঁরা চার ফুটের মতো দেয়াল গেঁথেছেন। শ্রমিকরা জানালেন, চেয়ারম্যান তাঁদের ওই কাজে নিয়োগ করেছেন।
উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্র জানায়, গত বছরের ৫ জুলাই মির্জাপুর ইউনিয়ন কমপ্লেক্সের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। পঞ্চাশ শতক জায়গার ওপর নির্মাণাধীন আধুনিক ডিজাইনের এ কমপ্লেক্সটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৪৮ লাখ ৬৪ হাজার টাকা। চলতি বছরের ৩১ এপ্রিল নাগাদ এর নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা।
ইউনিয়ন পরিষদের কয়েকজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, 'চেয়ারম্যান নিজেই রক্ষক হয়ে ভক্ষক সেজেছেন। ক্ষমতাসীন দলের নেতা হওয়ায় তা বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগও করা সম্ভব হচ্ছে না।' তাঁরা জানান, ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে ঘর নির্মাণের জন্য চেয়ারম্যান পরিষদের কোনো মতামত নেননি।
শেরপুর উপজেলা প্রকৌশলী শামছুজ্জামান কালের কণ্ঠকে বলেন, 'এমন খবর আমার জানা ছিল না। সেখানে এ রকম ঘর নির্মাণের কোনো সুযোগ নেই। কারণ, নকশাবহির্ভূত কোনো কাজ ইউপি কমপ্লেক্সে হওয়ার কথা নয়।' তিনি বলেন, 'ঘর নির্মাণ করা হলে তা ভেঙে ফেলতে সব ধরনের আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।'
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনজুর আলম প্রধান বলেন, 'কেউ ইউনিয়ন পরিষদের জায়গা দখল করে ঘর নির্মাণ করলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কারণ ইউনিয়ন পরিষদের জায়গা সরকারি সম্পত্তি। সেখানে কেউ কোনো স্থাপনা নির্মাণ করতে পারেন না।'
মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী মুন্টু কালের কণ্ঠকে বলেন, 'জায়গাটি অন্যরা দখলের চেষ্টা করছিল। তাই জায়গাটি দখলমুক্ত রাখতে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে আমি ঘরটি নির্মাণের ব্যবস্থা করেছি। এতে আমার কোনো স্বার্থ জড়িত নেই।' তিনি দাবি করেন, বিষয়টি ইউনিয়ন পরিষদের সভায় আলোচনা করেই তিনি করেছেন।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment