Tuesday, 16 March 2010

পদোন্নতি আটকে আ’লীগে যোগদানে বাধ্য করা হলো

বরিশাল শিক্ষা বোর্ডে নয়া কেলেঙ্কারি : পদোন্নতি আটকে আ’লীগে যোগদানে বাধ্য করা হলো
জি.এম. বাবর আলী, বরিশাল
বরিশাল শিক্ষা বোর্ডে সরকার দলীয় সমর্থক ছাড়া অন্য কেউ স্বাচ্ছন্দ্যে চাকরি করতে পারছেন না। ক্ষমতাসীন দলের সমর্থক হলে মিলছে পদোন্নতি। বিরোধী মনোভাবাপন্নদের পদোন্নতি আটকে আ’লীগে যোগদানে চাপ দেয়া হচ্ছে। পদোন্নতি পেতে কর্মচারী সংঘের চাপে লিটন নামের এক কর্মচারী লিখিত আবেদন করে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন। কর্মচারী সংঘের নেতাদের এহেন কর্মকাণ্ডে সহায়তা করার অভিযোগ রয়েঝে দ্বৈত নাগরিকত্বধারী অভিযুক্ত বোর্ড চেয়ারম্যান ড. বিমল কৃষ্ণ মজুমদারের বিরুদ্ধে। সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে ক্ষোভ থাকলেও মুখ খুলতে পারছেন না কেউই।
মহাজোট সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর বরিশাল শিক্ষাবোর্ডের এক শ্রেণীর কর্মকর্তা-কর্মচারী রাতারাতি আওয়ামী লীগের নেতা বনে যান। তাদের তাণ্ডবে অসহায় হয়ে পড়েছেন অন্য সবাই। আ’লীগ ক্ষমতায় আসার কয়েক মাস পরই ড. বিমল কৃষ্ণ মজুমদারকে বরিশাল শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান নিয়োগ দেয়া
হয়। তার বিরুদ্ধে দ্বৈত নাগরিকত্বের অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে পত্রপত্রিকায় খবরও প্রকাশ হয়। তার নিয়োগের পরপরই শিক্ষাবোর্ড দলীয় পরিচয়ে পদোন্নতির কার্যক্রম শুরু হয়। সাবেক বোর্ড চেয়ারম্যান ড. অলিউল মুর্তজা কবির চাপের মুখে ক্ষমতাসীন দলের সমর্থক কর্মচারীদের পদোন্নতি দিতে রাজি না হওয়ায় গত আগস্ট মাসে তাকে লাঞ্ছিত হতে হয়। বর্তমান চেয়ারম্যান ড. বিমল কৃষ্ণ মজুমদার ১৫ নভেম্বর তড়িঘড়ি করে এইচএসসি পাস তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী আজাদ ফারুককে সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক পদে পদোন্নতি দেন। একইভাবে অপর তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী আবুল বাশারকে সহকারী কলেজ পরিদর্শক পদে পদোন্নতি দেন। একাধিক শিক্ষক নেতার অভিযোগ, ভুয়া ডিগ্রি পাস সনদ জমা দিয়ে চাকরি করছেন আবুল বাশার।
চলতি সপ্তাহে এ শিক্ষাবোর্ডে ঘটেছে আরও চমকপ্রদ ঘটনা। বিরোধী মনোভাবাপন্ন এক কর্মচারীকে আ’লীগে যোগদান করিয়ে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে চলছে তোলপাড়। ১৯ ফেব্রুয়ারি শিক্ষাবোর্ডের সিলেকশন কমিটির সভায় ১৩ জন চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীকে অফিস সহকারী হিসেবে পদোন্নতি দেয়া হয়। এরমধ্যে সাখাওয়াত হোসেন লিটন নামের এক কর্মচারী বিরোধী দলের সমর্থক হওয়ায় তার পদোন্নতি আটকে দেয়া হয়। কাগজপত্রে ত্রুটি আছে বলে তার সঙ্গে মনিরুল ইসলাম ও অঞ্জন কুমারের পদোন্নতিও স্থগিত করা হয়। অবশেষে ১৪ মার্চ ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের চাপে সাখাওয়াত হোসেন লিটন আ’লীগে যোগ দিলে তাকে পদোন্নতির চিঠি দেয়া হয়। শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান সাংবাদিকদের বলেন, কোনো চাকরিজীবী এভাবে ঘোষণা দিয়ে কোনো দলে যোগদান করতে পারেন না। এ ব্যাপারে সাখাওয়াত হোসেন লিটন বলেন, ২৮ ফেব্রুয়ারি ১০ জনকে পদোন্নতির চিঠি দেয়া হলেও তাকেসহ ৩ জনকে চিঠি দেয়া হয়নি। তাদের কাগজপত্রে ত্রুটি আছে বলে জানানো হয়। কিন্তু পরবর্তীতে কর্মচারী সংঘের এক নেতা তাকে লিখিতভাবে আ’লীগে যোগদান করতে বলেন। পদোন্নতির স্বার্থে বাধ্য হয়ে তিনি কর্মচারী সংঘে লিখিত আবেদন করে আ’লীগে যোগ দিয়েছেন।
http://www.amardeshonline.com/pages/details/2010/03/17/23171

No comments:

Post a Comment