Monday 21 June 2010

তিন দালালের কর্মকান্ড ও ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্মের আগেই পতন।

আপডেটঃ আজ বাংলাদেশের ইন্টারনেট রপ্তানীর টেন্ডার আছিল। টেন্ডার পাইছে ভারতের কম্পানী। জটিল হিসাব নিকাশ সহজ করলে যা দাড়ায় তা হলো বাংলাদেশে ব্যান্ডউইথের মূল্যে তিন ভাগের এক ভাগ দামে এই রপ্তানী হচ্ছে। এদেরকে সব তথ্য পাবলিশ করতে বলেন তার পর দেখেন কোথায় কি হইল।

নিচের ছবিতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগের তিন দালালকে দেখুন।



প্রথমটা ডিগ্রী (পাস) পাশ রাজিউদ্দিন আহাম্মে রাজু, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী, দ্বিতীয়টা মেজর জেনারেল অব জিয়া আহাম্মেদ পিএসপি বিটিআরসি চেয়ারম্যান, ইনসেটে সচিব সুনিল কান্তি বোস, সচিব ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রনালয়।

কেন ও কিভাবে দালাল দেখুনঃ


১. বাংলাদেশ ইন্টারনেট/ব্যান্ডউইথ রপ্তানী/লীজ দেয়ার টেন্ডার কল করেছে।
২. টেন্ডার নোটিশটির নিচের দিকে দেখুন আগামী কাল মানে ২০ জুন ২০১০ দরপত্র দাখিলের শেষ তারিখ।
৩. কেন এই রপ্তানীঃ অতিগোপনীয়তা বজায় রেখে (কোন মিডিয়াতে বা সরকারের কেউ আজও জনগনকে বলেনি) গত বছর ডিসেম্বরে ভারতকে টেলিকরিডোর দেয়া সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভারতী এয়ারটেল ও রিলায়েন্স কমিউনিকেশন্স যৌথভাবে বিটিআরসির কাছে বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে উত্তর-পূর্ব ভারতে ফাইবার অপটিক নেটওয়ার্কের টেলিকরিডোর স্থাপন করার অনুমতি চাওয়ায় সরকার এ বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন শুধু আনুষ্ঠানিকতা বাকি। তবে এ বিষয়ে কঠোর গোপনীয়তা রক্ষা করা হচ্ছে। এ করিডোর দিয়ে তারা ফাইবার অপটিক ক্যাবল স্থাপন করে উত্তর-পূর্ব ভারতের ৭ রাজ্যের সঙ্গে টেলিযোগাযোগ সহজ ও সস্তা করতে চায়। বর্তমানে উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলো ভিস্যাটের মাধ্যমে ভারতের কেন্দ্র ও বহির্বিশ্বের সঙ্গে যুক্ত, যা খুবই ব্যয়বহুল। ঐ করিডোরে এই সাজানো টেন্ডারের ব্যাবন্ডউইথ দেয়া হবে অর্থাৎ ভারতে ইন্টারনেট রফতানী করা হবে। ওপেন টেন্ডার হলেও টেলিযোগাযোগ সচিব সুনিল কান্তি ভারতের অতি বিশ্বস্ত দালাল সব আয়োজন করে রেখেছে তার পৌত্রিক ভূমি ভারতে ব্যান্ডউইথ দেয়ার।

এই চক্রের কর্তাদের প্রফাইল।

১. জনাব রাজিউদ্দিন আহাম্মে রাজু, মাননীয় ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী।
২. জনাব সুনিল কান্তি বোস, সচিব ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রনালয়।
৩. মেজর জেনারেল অব জিয়া আহাম্মেদ পিএসপি চেয়ারম্যান বিটিআরসি (বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরী কমিশন)
৪. জনাব সুনিল কান্তি বোস, চেয়ারম্যান টেলিটক বাংলাদেশ লিঃ।
৫. জনাব সুনিল কান্তি বোস চেয়ারম্যান বাংলাদেশ সাবমেরিন কম্পানী লিঃ
৬. জনাব সুনিল কান্তি বোস, সভাপতি ন্যাশনাল ফ্রিকোয়েন্সি এলোকেশন কমিটি।
৭. জনাব সুনিল কান্তি বোস, চেয়ারম্যান বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ ক্যাবল শিল্প
৮. হাসানুল হক ইনু এমপি, চেয়ারম্যান সংসদীয় কমিটি ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রনালয়।

শেখ হাসিনা যেখানে জনগনকে ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখাচ্ছে। যেখানে সরকারের প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে শতশত কোটি টাকা খরচ করে কম্পিউটার কিনছে ও ওয়েবসাই বানাচ্ছে সেখানে গত দুই বছর ধরে ডিজিটাল বাংলাদেশের মেরুদন্ড বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ মন্ত্রনালয়ের এই দালালগুলি কি করছে তার সংক্ষিপ্ত ফিরিস্তি নিচে দেয়া হলো।

১. বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা বিশ্বের সর্বনিম্ন গতিতে নেটে কাজ করতে হচ্ছে কারন এরা বিশ্বের সর্বোউচ্চ মূল্যে ব্যান্ডউইথ বিক্রি করার কারনে বাংলাদেশের আইএসপিগুলোকে প্রতি ইউজার ৫ কিলোবাইট হারে ব্যান্ডউইথ ডিস্ট্রিবিউশন প্লান করতে হচ্ছে অথচ ২০০৭ সাল থেকে দেশের সর্বপ্রথম সাবমেরিন ক্যাবলে এরা ৪৫ মেগাবিট ব্যান্ডউইথের ৮০ ভাগ অব্যবহৃত রাখছে অর্থাৎ ব্যবহার হচ্ছে মাত্র ১০ গিগাবিট।

২. ভিওআইপি ওপেন করা নামে দুই বছর যাবৎ খালি কথাই দিয়ে যাচ্ছে এবং প্রতি মাসে শত কোটি টাকা ভাগাভাগি ক
রে খাচ্ছে। অথচ এ সংসদ অধিবেশনে ভিওআইপি ওপেন করার ঘোষনা মন্ত্রী দুই মাস আগে দিয়েছিল।

৩. উপজেলা পর্যন্ত অপটিক ফাইবার স্থাপনের কথা বললেও গত ২০০৯ জানুয়ারীতে সারাদেশে অপটিক ফাইবার স্থাপনের জন্য অপটিক এট হোম নামক একটি মাত্র কোম্পানীকে লাইসেন্স দিয়েছে। ckকি হাস্যকর একটি মাত্র লাইসেন্সসে শুধু ঢাকা শহরের ক্যাবল ঢুকাতেই বিশ বছর লাগবে, সারা দেশ আবার উপজেলা পর্যন্ত ৫০ বছর ?

৪. ভারতের কাছ থেকে হাজার কোটি টাকা খরচ করে স্যাটালাইট উৎক্ষেপনের পরিকল্পনা করছে।

৫. ঢাকায় অল্প একটু এলাকায় ওয়াইম্যাক্স নেটওয়ার্ক বাদ দিলে দেশে কোন ব্রডব্যান্ড ইনফ্রাস্টাকচর, বা অপটিক ফাইবার না থাকর পরও এদেশে ব্রডব্যান্ডের সবচেয়ে উপযোগী মাধ্যম থ্রিজি ওপেন করার কোন উদ্দোগই নিচ্ছে না। কারন ওয়াইমেক্স থেকে টাকা খাইছে।

৬. মাত্র ১৮ টি আইপি ফোনের লাইসেন্স দিয়েছে।

৭. ঢাকায় এডিএসএল এর নামে শত কোটি টাকা খাচ্ছে।

৮. টেলিটক শেয়ার মার্কেটে আনার জন্য অর্থমন্ত্রী ছয় মাস সময় দিলেও ১৮ মাস চলছে আরও ১৮ বছরেও সম্ভাবনা নাই।

৯. ডিজিটাল বাংলাদেশে পানি বিদ্যুৎ গ্যাসের মত প্রতিটি সরকারী প্রতিষ্ঠানে বিটিসিএল এর ইন্টারনেট থাকা উচিত থাকলেও সরকারকে একবার আইএসপিগুলির কাছে ব্যান্ডউইথ বিক্রি করে আবার তাদের কাছ থেকেই ইন্টারনেট কিনে সরকারী অফিসগুলোতে ব্যবহার করতে হচ্ছে।

এছাড়াও আরও হাজারটা ক্ষেত্রে হাজার রকম দুর্নিতি করেছে হাজার কোটি টাকা। যেমন ওয়ারিদের শেয়ার বিক্রিতে কোম্পানীর মূল্য দেখানো হয়েছে ১ কোটি টাকা, রাজস্ব ফাঁকি দেয়ার জন্য। দুইটা টিভি বন্ধ রেডিও ফ্রিকোয়েন্সী এফএম সহ অসংখ্য উদাহরন না হয় নাই দিলাম।

এখন বলুন এদের কি করা উচিত ?

http://www.somewhereinblog.net/blog/chorompotro5/29180564

Monday 14 June 2010

আ.লীগের দুই নেতার বিরুদ্ধে জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগ

বান্দরবানে আওয়ামী লীগের দুই প্রভাবশালী নেতা বান্দরবান সরকারি কলেজের জায়গা দখলের চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি, নেতারা প্রতিবন্ধী চিকিৎসা ও পুনর্বাসনকেন্দ্র এবং বান্দরবান ট্রাস্টের নামে ওই জায়গা দখল করছেন।
জমি দখল করার ঘটনার প্রতিবাদে গত বৃহস্পতিবার কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীরা মৌন মিছিল করেছেন। অবিলম্বে দখলের চেষ্টা বন্ধ করা না হলে তাঁরা গণবদলির দরখাস্ত দিয়ে কর্মস্থল ত্যাগের হুমকি দিয়েছেন।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য শফিকুর রহমান এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সদস্য কাজী মজিবর রহমান কলেজের জমি দখলের চেষ্টা করছেন।
অভিযোগ অস্বীকার করে শফিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, তিনি এ ব্যাপারে কিছু জানেন না। কাজী মজিবর রহমান জানান, যেখানে বান্দরবান ট্রাস্ট এবং প্রতিবন্ধী চিকিৎসা ও পুনর্বাসনকেন্দ্র করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, সেখানে কলেজের কোনো জমি নেই। জমি বুঝিয়ে দেওয়ার কথা জানানো হলেও কলেজ কর্তৃপক্ষ কোনো সাড়া দিচ্ছে না।
কলেজের অধ্যক্ষ সুভাষ চন্দ্র চক্রবর্তী প্রথম আলোকে জানান, কয়েক মাস আগে রাতের বেলায় কলেজের জায়গার ওপর প্রতিবন্ধী চিকিৎসা ও পুনর্বাসনকেন্দ্র লেখা একটি সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু কর্তৃপক্ষের প্রতিবাদের মুখে তখন তাঁরা জায়গাটির দখল নিতে পারেননি। এখন আবারও বান্দরবান ট্রাস্টের নামে জায়গা দখল করে খুঁটি গেড়ে দেওয়া হয়েছে। গতকাল রোববার বেলা ১১টার দিকে কলেজের শিক্ষার্থীরা সাইনবোর্ডটি উপরে ফেলেন।

http://www.prothom-alo.com/detail/date/2010-06-14/news/70782

Monday 7 June 2010

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আ.লীগ নেতার বাড়ির রাস্তা সম্প্রসারণ

ধসে পড়ছে পাশের বাড়ি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের এক প্রভাবশালী নেতার বাড়ির সামনের রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য পৌরসভা কর্তৃপক্ষ মাটি কাটায় পার্শ্ববর্তী একটি বাড়ির একাংশ ধসে পড়েছে। গত শুক্রবার রাতে পৌর এলাকার ফুলবাড়িয়ায় এ ঘটনা ঘটে।
অভিযোগ উঠেছে, রাস্তাটি পৌরসভার নয়। এই আওয়ামী লীগের নেতা পৌর মেয়রের আত্মীয় হওয়ায় কাজটি করে দেওয়া হয়েছে। পৌরসভা কর্তৃপক্ষ এ জন্য কোনো দরপত্রও আহ্বান করেনি।
জানা গেছে, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আমানুল হকের বাড়ির সংযোগ রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ করতে গিয়ে পৌর কর্তৃপক্ষ মাটি খোঁড়ে। ফলে পার্শ্ববর্তী প্রয়াত হানিফ মিয়ার পাকা বাড়ির কয়েকটি কক্ষ ধসে পড়ে।
পৌর মেয়র হাফিজুর রহমান মোল্লা বলেন, রাস্তাটি পৌরসভার না হলেও পৌর এলাকার মানুষ এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করে। কাজেই এই রাস্তা মেরামতের দায়িত্ব পৌরসভারই। দরপত্র আহ্বান না করে কাজ শুরু করা প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, জরুরি পরিস্থিতিতে কাজ করার ক্ষেত্রে দরপত্র আহ্বানের প্রয়োজন হয় না।
ধসে পড়া বাড়ির মালিকের চাচাতো ভাই জেলা আওয়ামী লীগের অন্যতম সহসভাপতি হেলাল উদ্দিন জানান, আমানুল হক পৌর মেয়রের বেয়াই। তিনি বলেন, কারও ব্যক্তিগত রাস্তা সম্প্রসারণ কোনোভাবেই পৌরসভার কাছে জরুরি প্রয়োজন বলে বিবেচিত হতে পারে না।
প্রয়াত হানিফ মিয়ার স্ত্রী মর্জিনা বেগম বলেন, ওই রাস্তা সম্প্রসারণ করায় তাঁদের একতলা ভবনের নিচের মাটি সরে গেছে। বাড়ির একাংশ ভেঙে পড়েছে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন ও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছে। বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে বাড়ির গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ।

http://www.prothom-alo.com/detail/date/2010-06-07/news/69077

Thursday 3 June 2010

বিমানবন্দর সম্প্রসারণ সম্ভব হবে না : ৪৩৪ বিঘা জমি বিদেশির হাতে তুলে দিতে মরিয়া প্রভাবশালীরা



04/05/2010
কাদের গনি চৌধুরী
ঢাকায় হযরত শাহ্জালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাগোয়া ৪৩৪ বিঘা সরকারি জমি বিদেশি কোম্পানির হাতে তুলে দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে সরকারের প্রভাবশালী একটি মহল। বর্তমান বাজারে এ জমির মূল্য ১৩ হাজার কোটি টাকারও বেশি বলে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে। এ জমি সরকারের হাতছাড়া হয়ে গেলে হযরত শাহ্জালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণের আর কোনো সুযোগ থাকবে না। সূত্র জানায়, প্রথমদিকে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি জাতীয় স্বার্থপরিপন্থী এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলেও বর্তমানে তারা আর সে অবস্থানে নেই। একাধিক মন্ত্রীও তদবির করছেন জমিটি বিদেশি ওই কোম্পানির হাতে তুলে দিতে। শুধু তাই নয়, এরই মধ্যে সরকারের এক প্রভাবশালী মন্ত্রীর প্রতিষ্ঠান বিদেশি ওই কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে এ জমিটি পাইয়ে দেয়ার জন্য। তবে বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী জিএম কাদের এখনও বিমানবন্দরের জন্য অপরিহার্য এ জমি বিদেশি কোম্পানির হাতে তুলে না দেয়ার পক্ষে একাট্টা অবস্থানে অটুট আছেন।
বিমানবন্দরের জন্য অপরিহার্য এ জমি বিদেশি কোম্পানিকে দেয়া হবে কি হবে না এ নিয়ে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং সংসদীয় স্থায়ী কমিটির মধ্যে টানাপড়েন শুরু হয়েছে। এনিয়ে শুধু সংসদীয় কমিটির বৈঠকে ‘হটটকই’ হয়নি, একাধিকবার চিঠিও চালাচালি হয়েছে। সর্বশেষ উভয়পক্ষ একমত হয়েছে যে, প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ হবে। এরপর থেকে সরকারের উচ্চপর্যায়ে ব্যাপক লবিং শুরু করেছে মহলটি। শুরু হয়েছে টাকার ছড়াছড়ি। সূত্র জানায়, এরই মধ্যে সরকারের প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করে ফেলেছে ওই বিদেশি কোম্পানির এ দেশীয় এজেন্টরা। খুব শিগগিরই তারা চুক্তি অনুযায়ী ৩৯০ বিঘা জমি বিদেশি কোম্পানির হাতে তুলে দেয়ার প্রস্তাব নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাবেন।
জানা যায়, ন্যাম সম্মেলনকে সামনে রেখে গত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ১৯৯৯ সালে জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রবেশপথের পূর্ব ও পশ্চিম পাশে ১৪৪ দশমিক ৮০ একর (৪৩৪ বিঘা) জমির ওপর একটি পাঁচতারা হোটেল, একটি তিনতারা হোটেল, একটি কান্ট্রি ক্লাব ও এশিয়ার সর্ববৃহত্ ১৮ হোলবিশিষ্ট গলফ কোর্ট নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়। ওই বছরের ডিসেম্বরে হোটেল, কান্ট্রি ক্লাব ও গলফ কোর্স নির্মাণের জন্য লিজ নিয়ে কাজের দরপত্র আহ্বান করা হয় কয়েকটি অখ্যাত পত্রিকায়। তখন সাতটি দেশ দরপত্রে অংশ নিলেও তত্কালীন বিমানমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের ছেলে জড়িত থাকার সুবাধে সিঙ্গাপুরের নিবন্ধনকারী কোম্পানি ইপকো ইন্টারন্যাশনালকে কাজটি দেয়া হয়। এ সময় তত্কালীন বিমানমন্ত্রীর ছেলে জড়িত থাকায় ইপকো ইন্টারন্যাশনালের সঙ্গে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের একটি অস্বচ্ছ ও অসম চুক্তি স্বাক্ষর হয়। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ১৩ হাজার কোটি টাকার এ সরকারি জমি লিজ দিয়ে সরকার ৬০ বছরে পাবে মাত্র ১০৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা। তবে জমিটি লিজ দিলে বিমানবন্দরটি সম্প্রসারণের কোনো সুযোগ থাকবে না। ফলে এ বিমানবন্দরটি একসময় অকার্যকর হয়ে পড়বে। এতে দেশের বড় ক্ষতি হবে।
সূত্র জানায়, চুক্তিতে বলা হয়, লিজ বাবদ বছরে ৩ লাখ ২৫ হাজার মার্কিন ডলার ভাড়া এবং মোট বিক্রির দেড় শতাংশ আয় বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষকে ৬০ বছরে পরিশোধ করা হবে। অর্থাত্ এতে সর্বমোট পাওয়া যাবে ১০৫ কোটি ৩০ লাখ টাকার মতো। অথচ ওই সময় মালেশিয়া, ফ্রান্স ও সিঙ্গাপুরের তিনটি কোম্পানি ৪০ বছরের জন্য লিজ নিয়ে সরকারকে প্রায় ২৫০ কোটি টাকা দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু তখন এসব প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়নি।
আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা ছাড়ার পর ২০০০ সালের শেষদিকে তত্কালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আইন ও বিমান মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা ব্যারিস্টার সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ এ চুক্তিটি বাতিলের উদ্যোগ নেন। তিনি আইনি মতামতের জন্য ফাইলটি অ্যাটর্নি জেনারেলের দফতরে পাঠান। তখন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, অসম চুক্তিটি বাতিল অথবা সরকারের স্বার্থ রক্ষা করে আবার চুক্তি করতে হবে। ফাইলটি মন্ত্রণালয়ে আসার কিছুদিন পর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় আসে। বিএনপি সরকারের বিমান প্রতিমন্ত্রীও ম্যানেজ হয়ে যান। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় লিজ নেয়া জায়গায় কাজও শুরু করে দেন তারা। বিমানবন্দরের প্রবেশমুখের পশ্চিম পাশে বিশাল সাইনবোর্ড টানিয়ে দেয় ইপকো। বিশাল সাইনবোর্ডে লেখা ছিল ‘ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট,’ ‘হলিডে ইন হোটেল অ্যান্ড শপিং অর্কিং।’ তখন এ চুক্তি নিয়ে কথা উঠলে বিএনপি সরকার চুক্তি বাতিলের উদ্যোগ নেয়। ইপকোর পক্ষে-বিপক্ষে দুটি গ্রুপ হয়ে যায়। ফলে বেকায়দায় পড়ে যায় ইপকো।
সূত্র জানায়, ইপকোর সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী ২০০১ সাল থেকে ২০০৫ সালের মধ্যে সব কাজ শেষ করার কথা। কিন্তু তারা তিনটি ভবনের কিছু অংশ নির্মাণের পর কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়।
১/১১-এর পর তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্ব নিয়ে এ চুক্তি যথাযথ হয়েছে কিনা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ফখরুল ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি ২০০৮ সালের আগস্টে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। তদন্ত প্রতিবেদনে সিঙ্গাপুরের ইপকো ইন্টারন্যাশনালের সঙ্গে লিজে অস্বচ্ছতা, দু’বছর ধরে কাজ বন্ধ থাকা, প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি মাত্র ১০৫ কোটি টাকায় ৬০ বছরের জন্য দেয়া লিজ চুক্তির বিভিন্ন ত্রুটি ও অসামঞ্জস্যতা তুলে ধরা হয়। এরপর তত্ত্বাবধায়ক সরকার চুক্তি অনুসারে সময় মতো কাজ সম্পন্ন করতে না পারায় চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়।
এরপর আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর তাদের সময় সম্পাদিত অস্বচ্ছ চুক্তি অনুযায়ী ৪৩৪ বিঘা জমি ইপকোর হাতে তুলে দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। উল্লেখ্য, গত আওয়ামী লীগ সরকারের বিমানমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি (যার সময় এ চুক্তি হয়েছিল) বর্তমানে তিনি বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি। কমিটির সভাপতি হিসেবে তিনি ৩১ আগস্ট বিমানমন্ত্রীকে লেখা এক চিঠিতে বলেন, ‘বিগত ২৫/০৮/২০০৯ তারিখে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সপ্তম বৈঠকের পর আমার গোচরীভূত হয়েছে যে, ইপকো একটি একক প্রতিষ্ঠান নয়। যেহেতু কমিটির সদস্যরা অসমাপ্ত হোটেল দুটির অসমাপ্ত কাজ দ্রুতগতিতে সমাপ্ত করার পক্ষে, যার সঙ্গে আপনিও একমত। এছাড়াও সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়েও হোটেল দুটির অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করার বিষয়ে একমত।’ ওই চিঠিতে তিনি ইপকোকে কাজ সমাপ্ত করার সুযোগ দেয়ার জন্য প্রকল্প সমাপ্তির প্রকৃত সময় ৩ বছর পর্যন্ত বাড়ানোরও সুপারিশ করেন। অথচ সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সপ্তম বৈঠকের সিদ্ধান্ত ছিল এরকম : ‘গলফ কোর্স ও কান্ট্রি ক্লাবের বরাদ্দকৃত জায়গা ভবিষ্যতে বিমানবন্দর সম্প্রসারণের জন্য অতীব প্রয়োজন বিধায় তা ফেরত আনার জন্য ডেভেলপার কোম্পানির সঙ্গে আইনগত দিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আপাতত অন্য কোনো প্রদক্ষেপ না নিয়ে সমঝোতার লক্ষ্যে আলোচনার মাধ্যমে মীমাংসা করতে হবে।’
জানা যায়, ১৯৯৬ সালের এপ্রিলে সিএএবি হোটেল নির্মাণের বিষয়ে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। ১৯৯৮ সালে টেন্ডার আহ্বান করা হয়। ৭টি প্রতিষ্ঠান তাদের অফার পেশ করে। পরবর্তী সময়ে বিওটি অফার চাওয়া হয়। ১০টি প্রতিষ্ঠানকে (আগের ৭টিসহ) পত্র দেয়া হলে ৮টি প্রতিষ্ঠান বিওটি পদ্ধতিতে অফার পেশ করে।
এ বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চাওয়া হলে ১৯৯৯ সালের ১১ মে আইন মন্ত্রণালয় জানায়, বাস্তবতার নিরিখে আইনগত জটিলতার প্রশ্ন আছে বলে মনে হয় না। আইন মন্ত্রণালয়ের ক্লিয়ারেন্স পাওয়ার পর ইপকো’র সঙ্গে একটি ফলপ্রসূ বৈঠক হয়। ইপকো তাদের একটি ড্রাফট চুক্তি পেশ করলে প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর প্যানেল আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিকুল হককে আইনগত দিক পরীক্ষার জন্য দায়িত্ব দেয়া হয়। তিনি আরবিট্রেশন ক্লসসহ কয়েকটি ক্লস-এর সংশোধনী আনেন এবং আরও আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তি করা আবশ্যক বলে জানান। আইনজ্ঞ কর্তৃক প্রদত্ত মতামতসহ খসড়া চুক্তিপত্র ইপকো সিঙ্গাপুরে পাঠালে তারা নতুন করে একটি হেড অব এগ্রিম্যান্ট-এর খসড়া কপি প্রেরণ করেন এবং ইপকোর প্রতিনিধি ৪-৩-২০০০ তারিখে ঢাকায় আসেন। ৫-৩-২০০০ তারিখে সিএএবি’র চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় উভয় পক্ষের সম্মতি অনুযায়ী হোটেল নির্মাণের বিষয়ে প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে হেড অব এগ্রিম্যান্ট স্বাক্ষরিত হয়। এ সংক্রান্ত সারসংক্ষেপ ৪ এপ্রিল ২০০০ তারিখে তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন করেন।
চুক্তির প্রধান প্রধান শর্তগুলো নিম্নরূপ :
বিওটি পিরিয়ড ৬০ বছর। দুটি হোটেলের জন্য ১০ একর এবং গলফ কোর্স ও কান্ট্রি ক্লাবের জন্য ১৩৬ একর জমি ইপকো’কে লিজ দেয়া হবে। ন্যাম সম্মেলনের আগে পাঁচতারকা হোটেলের ২৫০টি কক্ষ সব সুবিধাসহ ইপকো’কে সম্পন্ন করতে হবে, অন্যথায় ১৫,০০০ ইউএস ডলার ইপকো’কে প্রতি মাসে বিলম্বের জন্য Compensation দিতে হবে।
হোটেলের ১০ একর জমির বিপরীতে ইপকো বার্ষিক ২,২৫,০০০.০০ (দুই লাখ পঁচিশ হাজার ইউএস ডলার) সিএএবি’কে প্রদান করবে এবং প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের নিশ্চয়তাস্বরূপ Performance Guarantee-এর পরিবর্তে জামানত হিসেবে এক বছরের লিজ রেন্টের সমপরিমাণ অর্থ অগ্রিম প্রদান করবে। গল্ফ কোর্স এরিয়া এয়ারপোর্ট সমপ্রসারণের জন্য ভবিষ্যতে প্রয়োজন হতে পারে বিধায় বিওটি পিরিয়ড ৬০ বছর থাকলেও ২৫ বছর ব্যবহারের পর সিএএবি ১০ বছরের অগ্রিম নোটিশে গলফ কোর্স এরিয়া থেকে ইপকো কর্তৃক ব্যবহারের অনুমতি প্রত্যাহার করতে পারবে। ইপকো সমগ্র প্রকল্পটি ৭ (সাত) বছরের মধ্যে সম্পন্ন করবে এবং সমগ্র প্রকল্পের Gross Revenue-এর ১.৫% সিএএবি’কে বার্ষিক ভিত্তিতে প্রদান করবে। চুক্তির শর্ত ইপকো কর্তৃক প্রতিপালিত হচ্ছে কিনা এ বিষয়ে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য মন্ত্রণালয় থেকে গত ১০ জুলাই ২০০১ তারিখে পত্র দেয়া হয়।
ইপকো কর্তৃক হোটেল নির্মাণ শুরু না করা, নিরাপত্তা জামানত জমা না দেয়া এবং ভাড়ার টাকা পরিশোধ না করার কারণে ইপকো’র সঙ্গে বাস্তবায়নাধীন তিনটি চুক্তির আওতাধীন নির্মাণ কাজের Land Lease চুক্তি বাতিল করে। সিএএবি’র ২৩-৮-২০০১ তারিখের Land Lease চুক্তি বাতিলের প্রেক্ষিতে ইপকো জানায়, সিএএবি ইপকো’র তিনটি আলাদা কোম্পানির সঙ্গে আলাদা আলাদা রেজিস্টার্ড চুক্তি করলেও শুধু একটি চিঠিতে তিনটি আলাদা চুক্তি বাতিল করেছে, যা আইনের দৃষ্টিতে গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
http://www.amardeshonline.com/pages/details/2010/05/04/30225

দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রয়োজন নেই : মখা আলমগীর : প্রথম আলো ও ট্রান্সকমের মালিককে দেয়া দুদকের নোটিশ কোথায়?



04/05/2010
স্টাফ রিপোর্টার
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রয়োজন নেই বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সরকারি হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দুই বছরের কর্মকাণ্ডের জন্য দুদককে ক্ষমা চাওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ওই সময় দুদক সংবিধান লঙ্ঘন করে বিশেষ গোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষায় স্বৈরতন্ত্রের তল্পিবাহক হিসেবে কাজ করেছে। গণতান্ত্রিক দেশে এ ধরনের দুদকের কোনো প্রয়োজন নেই। দুদক আইনের সংশোধনকে ইতিবাচক আখ্যায়িত করে মহীউদ্দীন খান বলেন, সরকারের কোনো প্রতিষ্ঠানই পূর্ণ স্বাধীন হতে পারে না। দুদককে নিরঙ্কুুশ ক্ষমতা দেয়া হলে সেনাপ্রধানও নিরঙ্কুশ ক্ষমতা চাইবেন।
গতকাল সোমবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সরকারি হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে ব্রিফিংকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর এসব কথা বলেন। ওয়ান ইলেভেনের পর দুদকের কর্মকাণ্ডের কঠোর সমালোচনা করে তিনি প্রশ্ন তোলেন, ওই সময় প্রথম আলো ও ট্রান্সকমের মালিক লতিফুর রহমানকে দুদক যে নোটিশ দিয়েছিল সেই নোটিশ এখন কোথায়? মিডিয়া সেন্টারে অনুষ্ঠিত প্রেস ব্রিফিংয়ে মহীউদ্দীন খান আলমগীর দুদক আইন সংশোধন প্রসঙ্গে বলেন, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় নিযুক্তিয় কর্তৃপক্ষ নির্বাচিত কর্তৃপক্ষের ওপরে স্থান পেতে পারে না। দুর্নীতি দমন কমিশন, নির্বাচন কমিশন, পাবলিক সার্ভিস কমিশন—এসবই সরকারের নিযুক্তিয় কর্তৃপক্ষ। এগুলোর স্থান কখনোই সংসদের উপরে হতে পারে না। সেটা হলে স্বৈরতন্ত্রকে প্রশ্রয় দেয়া হবে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, দুদককে অবশ্যই আইন অনুযায়ী কাজ করতে হবে। সংবিধান অনুযায়ী কোনো সরকারি সংস্থা সরাসরি বিদেশি সাহায্য নিতে পারে না। কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দুদক সরাসরি বিদেশি সাহায্য নিয়েছে। এমনকি ওই সময়ের দুদক চেয়ারম্যান হাসান মশহুদ চৌধুরী বিনা টেন্ডারে দুদকের আসবাবপত্র বিক্রি করে দিয়েছেন। এর বিচার কে করবে? তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, যারা কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার করল কেন তাদের কিছু হলো না?
তিনি বলেন, ফখরুদ্দীন-মইনউদ্দিনের আমলে দুদক বিনা দোষে রাজনীতিবিদদের হয়রানি করেছে। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বিবৃতি দেইনি বলে আমাকে গ্রেফতার করে সাজা দিয়েছে। কিন্তু কোনো অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি। দাঁত-নখওয়ালা কোনো সংস্থাকে বিনা দোষে কাউকে কামড়ানোর ক্ষমতা আমরা দিতে চাই না।
দুদক আইনের সংশোধন সম্পর্কে অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমেদের বক্তব্যের জবাবে মহীউদ্দীন খান আলমগীর বলেন, আইনের ফাঁকফোকর নয়, আইনের মাধ্যমেই আমরা মুক্ত হয়ে জনগণের রায়ে নির্বাচিত হয়ে সংসদে এসেছি। অথচ মোজাফফর আহমেদ বিদেশি টাকার বিনিময়ে জনগণের সমর্থন ছাড়াই কথা বলছেন। আইনের ফাঁকফোকর গলিয়ে অনেক দুর্নীতিবাজ সংসদ সদস্য হয়ে গেছেন—এমন কথা বলে অধ্যাপক মোজাফ্ফর আদালত অবমাননা করেছেন।
সংবিধান লঙ্ঘনকারীদের বড় দুর্নীতিবাজ আখ্যায়িত করে তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, রাষ্ট্রের সংবিধানকে লঙ্ঘন করে গোষ্ঠীস্বার্থে প্রশাসনকে স্বৈরাচারী কায়দায় পরিচালনাকারী মইন উ আহমেদের বস্তাপচা বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করতে তিনি (অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমেদ) গলফ ক্লাবে গিয়েছিলেন কোন নীতি-আদর্শ নিয়ে? তিনি যখন ইনস্টিটিউট অব বিজনেস ম্যানেজমেন্টে চাকরি করতেন তখন ওই প্রতিষ্ঠানের টাকা কিভাবে তার ব্যক্তিগত একাউন্টে জমা হয়েছিল সেটা আজও জাতি জানতে পারল না। তার কোনো নীতি নেই, তিনিই সবচেয়ে বড় দুর্নীতিবাজ।
উল্লেখ্য, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ম.খা. আলমগীরকে আটক করে যৌথবাহিনী। দুর্নীতির দায়ে ১৩ বছরের সাজাও হয় তার। পরে তিনি জামিনে বেরিয়ে এসে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তার দুর্নীতির মামলাটি বাতিল হয়ে যায়।
এদিকে গতকালের বৈঠক সম্পর্কে ম.খা. আলমগীর জানান, বৈঠকে স্থানীয় সরকার বিভাগের ১৯৯১ থেকে ’৯৬ সাল পর্যন্ত সময়ে ৫ জন নির্বাহী প্রকৌশলীর দুর্নীতি, সোনালী ব্যাংকের রফতানির বিপরীতে ঋণপত্রের (এলসি) বিদেশি মুদ্রা আত্মসাত্, একই ব্যাংকের ঋণ আদায়ে ব্যর্থতা এবং রূপালী ব্যাংকের আমানতকারীর টাকা আত্মসাতের বিষয়ে আলোচনা হয়। দুদকের অডিট রিপোর্ট নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ ১৯৯১ সাল থেকে ’৯৬ সাল পর্যন্ত ৫ জন নির্বাহী প্রকৌশলী ৫২ কোটিরও বেশি টাকা নিয়ম অনুযায়ী জমা দেননি। কমিটির পক্ষ থেকে শুধু ওই ৫ জন নির্বাহী প্রকৌশলী নয়, ৬৪ জেলার নির্বাহী প্রকৌশলীর দফতর ওই সময় দরপত্র, জরিমানা এবং জামানতের টাকা জমা দেয়নি। এক্ষেত্রে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় পদক্ষেপ নেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। তার মতে, মন্ত্রী এবং সচিবদের যথাযথ তদারকির অভাবেই ওই সময়ে দুর্নীতি হয়েছে।
তিনি বলেন, ২০০২ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত সোনালী ব্যাংকের রফতানি বিলের বিপরীতে যে পরিমাণ বিদেশি মুদ্রা আসার কথা ছিল তা আসেনি। আমরা তদন্ত করে দেখেছি, ব্যাংকের একশ্রেণীর কর্মকর্তা ওই টাকা বিদেশে রেখে নিজেদের ভোগ-বিলাসে ব্যয় করেছে। ওইসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি মামলা দায়ের করারও সুপারিশ করা হয়েছে।
সভাপতি ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীরের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য অধ্যাপক মোঃ আলী আশরাফ, এম কে আনোয়ার, মুহা. ইমাজউদ্দিন প্রাং, মোহাম্মদ ছায়েদুল হক, এ. কে. এম. রহমতউল্লাহ, খান টিপু সুলতান, মেজর জেনারেল (অব.) আবদুস সালাম, নারায়ণ চন্দ্র চন্দ এবং মোছা. ফরিদা আখতার বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন।

http://www.amardeshonline.com/pages/details/2010/05/04/30226

যমুনা সার কারখানায় লুটপাট : শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়ার বিরুদ্ধে কোটি টাকার গাড়ি নেয়ার অভিযোগ

03/05/2010

জামালপুর প্রতিনিধি
কোটি কোটি টাকা লুটপাট আড়াল করতে শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়াকে ৯১ লাখ টাকা দামের গাড়ি ও দুটি এসি উপঢৌকন দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মিত্সুবিসি কোম্পানির দামি এ গাড়ি এবং দুটি এয়ারকন্ডিশনার শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়ার অফিসে পৌঁছে দেয়া হয়েছে। গাড়ির নম্বর জামালপুর ১১-০০২০। তবে মন্ত্রী এখনও গাড়ির চাবি বুঝে নেননি।
সূত্র জানিয়েছে, গত ২০ এপ্রিল থেকে যমুনা সার কারখানা বন্ধ করে ২৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ওভারহোলিংয়ের কাজ শুরু হয়েছে। চলবে ১৯ মে পর্যন্ত। এই ওভারহোলিংয়ের নামে শ্রমিক নিয়োগ ও মালামাল কেনা বাবদ কোটি কোটি টাকা আত্মসাত্ ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট শহিদুল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহম্মেদ চৌধুরী শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়ার উপস্থিতিতে এ অভিযোগ উত্থাপন করেন। শুক্রবার যমুনা সার কারখানা শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের (সিবিএ) এক অভিষেক অনুষ্ঠানে মন্ত্রী তারাকান্দিতে এলে মঞ্চে তার উপস্থিতিতেই বক্তৃতায় এসব অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগ নেতারা। কিন্তু মন্ত্রী ওভারহোলিংয়ের নামে দুর্নীতি বিষয়ে কোনো মন্তব্যই করেননি অনুষ্ঠানে।
জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট মোঃ শহিদুল্লাহ এবং স্থানীয় নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো জানিয়েছে, ওভারহোলিংয়ের নামে কোটি কোটি টাকা লুটপাট আড়াল করতেই মন্ত্রীকে এসব উপঢৌকন দেয়া হয়। এ ব্যাপারে অ্যাডভোকেট শহিদুল্লাহ বলেন, ওভারহোলিংয়ের নামে যমুনা সার কারখানায় প্রতিবছর কোটি কোটি টাকা লুটপাট হয়। এ টাকা ভাগ হয় সিবিএ এবং বিসিআইসির সর্বস্তরের কর্মকর্তার মধ্যে। গতকাল ফোনে সাংবাদিকদের কাছে মন্ত্রীকে গাড়ি উপঢৌকন দেয়ার সত্যতা স্বীকার করেছেন যমুনা সার কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহসানুজ্জামান।
গতরাতে টেলিফোনে শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়ার কাছে উপঢৌকন হিসেবে গাড়ি নেয়ার ব্যাপারে ঢাকা অফিস থেকে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কারও কাছে কোন গাড়ি চাইনি। এখনও আমি আমার পুরনো গাড়ি চালাচ্ছি। তিনি বলেন, যেসব অভিযোগ আসছে সে ব্যাপারে বিসিআইসি’ই ভাল জবাব দিতে পারবে।

http://www.amardeshonline.com/pages/details/2010/05/03/30076

ঘরে-বাইরে তোপের মুখে এমপি মেনন : দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগ



01/05/2010

দিলরুবা সুমী
ছাত্রজীবন এবং যৌবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সময় তিনি ব্যয় করেছেন নিপীড়িত মানুষের কল্যাণে রাজনীতি করে। স্বাধীনতা সংগ্রাম, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনসহ বিভিন্ন গণতান্ত্রিক সংগ্রামে রয়েছে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। কিন্তু সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড তার অতীতের এ উজ্জ্বল অবদানকে ম্লান করে দিয়েছে। এখন নিজ দলের নেতাকর্মীসহ দেশের মানুষের কাছে ব্যাপকভাবে সমালোচিত ও বিতর্কিত। তিনি ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, মহাজোট সরকারের ১৫ মাসে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগের পাহাড় জমেছে। বিশেষ করে রাজধানীর দুটি সেরা স্কুল ভিকারুননিসা ও আইডিয়ালে ভর্তির ক্ষেত্রে কোটি কোটি টাকার ভর্তি-বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এক সময়কার আদর্শিক নেতা হিসেবে সুপরিচিত বাম ঘরানার অভিজ্ঞ এই রাজনীতিক আদর্শ ও মূলনীতি থেকে সরে গিয়েছেন বলে তার দলের ভেতর থেকে অভিযোগ উঠেছে। নিজ দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আওয়ামী লীগের ‘নৌকা’ প্রতীক নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতার দম্ভ দেখাতে শুরু করেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। এসব অভিযোগের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও তাকে ডেকে পাঠিয়ে সতর্ক করেছেন বলে জানা গেছে। এমনকি নিজ দল থেকেও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার উদ্যোগ চলছে। দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তার বিষয়ে আদালতে মামলা থাকায় আপাতত কোনো মন্তব্য করা যাচ্ছে না। এ মামলার নিষ্পত্তি হওয়ার পরই দলের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের ডেকে সব কথা বলা হবে।
২০০৯ সালের ডিসেম্বরের নির্বাচনে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর, বিশেষ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে একের পর এক বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের মধ্যে জড়িয়ে পড়ছেন। তার বিরুদ্ধে আর্থিক কেলেঙ্কারীর অভিযোগ উঠেছে। দুটি সেরা স্কুলে ভর্তি-বাণিজ্য, বহির্ভূতভাবে গভর্নিং বডির সদস্য ও শিক্ষক নিয়োগ, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষকে অন্যায়ভাবে অপসারণের চেষ্টা, সভাপতি পদে থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ও নিয়মিত কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টির মতো গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এসব বিষয় বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকেও গুরুত্ব সহকারে ছাপাও হয়েছে।
তবে রহস্যজনক বিষয় হলো এতসব অভিযোগ উঠার পরও রাশেদ খান মেনন একেবারেই নিশ্চুপ। এসব অভিযোগের কোনো প্রতিবাদ করেননি। একটি সংবাদ সম্মেলন করেও অভিযোগের কোনো ধরনের জবাব দেননি তিনি। এসব কারণে দলীয়ভাবেও ব্যাপক সমালোচিত হচ্ছেন তিনি।
এতসব অভিযোগ উঠার পরও কেন চুপচাপ আছেন জানতে চাইলে এমপি রাশেদ খান মেনন আমার দেশকে বলেন, সময় হলেই সব বলব। এখন কোনো কিছু বলব না। ভিকারুননিসা নূনের অধ্যক্ষকে সরিয়ে দেয়ার অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, এ বিষয়ে একটি মামলা চলছে। মামলা শেষ হলেই এ বিষয়ে কথা বলব। এর আগে না।
একটি বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ২০ দিন আমেরিকা থাকার পর ১৭ এপ্রিল দেশে ফেরেন তিনি। এর পরদিনই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তাকে তলব করা হয়। তার বিরুদ্ধে উঠা এসব অভিযোগ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানতে চান এবং তাকে সতর্ক করে দেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। পরে তিনি শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সঙ্গেও তার সচিবালয় কার্যালয়ে দেখা করেন।
রাশেদ খান মেনন প্রধানমন্ত্রী তাকে ডেকে পাঠানোর বিষয়টি অস্বীকার করেন। আমার দেশকে তিনি বলেন, আমাকে ডেকে পাঠানো হয়নি। অনেকদিন বিদেশে ছিলাম। তাই দেশে এসে সৌজন্য সাক্ষাত্ করতে নিজ থেকেই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গিয়েছি। সেখানে অন্য কোনো বিষয়ে আলোচনা হয়নি।
দলীয় এক সূত্রে জানা যায়, ভিকারুননিসা নূনের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রোকেয়া আক্তার বেগম যদি দায়িত্বে থাকেন তাহলে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর চিন্তা করছেন এমপি রাশেদ খান মেনন।
ভর্তি-বাণিজ্য : রাশেদ খান মেননের বিরুদ্ধে সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগ হচ্ছে রাজধানীর অন্যতম সেরা দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে ২ থেকে ৪ লাখ টাকার বিনিময়ে অবৈধভাবে ছাত্রছাত্রী ভর্তি করানো। স্থানীয় সংসদ সদস্য হিসেবে তিনি এ দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটির সভাপতি। আর সে সুযোগে ভিকারুননিসা ও আইডিয়াল স্কুলে অবৈধভাবে শিক্ষার্থী ভর্তি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। এই কর্মকাণ্ডে তার ঘনিষ্ঠ সঙ্গী-সাথী, স্ত্রী এবং ছেলেও জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে।
ভিকারুননিসার নূনের অধ্যক্ষ রোকেয়া আক্তার বেগম সম্প্রতি এক সাক্ষাত্কারে আমার দেশ-এর কাছে এ অবৈধ ভর্তির কথা স্বীকার করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, এ বছর স্কুলে নতুন ভর্তির শতকরা ৩৫ ভাগই সুপারিশের ভিত্তিতে করা হয়েছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি এ হার বাড়িয়ে ৫০ ভাগ করতে বলেছিল বলে জানান তিনি।
তিনি আরও জানান, পরীক্ষার আগে সভাপতি ১৫টি এবং শিক্ষক প্রতিনিধিসহ সব সদস্য প্রত্যেকে সাতটি করে মোট ৭১টি ফরম স্কুল থেকে স্বাক্ষর করে বাড়িতে নিয়ে গেছেন, যে ঘটনা অতীতে কখনও ঘটেনি। সেই ৭১ ফরমে আবেদন করা সবাইকে ভর্তি করা হয়েছে। এরপর সভাপতি রাশেদ খান মেনন কোনো স্বাক্ষর ছাড়া আরও ১৫০ ছাত্রীর তালিকা তৈরি করে পাঠান। এদেরও ভর্তি করা হয়। এর বাইরে টেলিফোনে সুপারিশের ভিত্তিতেও অনেক ছাত্রী ভর্তি করাতে বাধ্য হন তিনি। এসব ভর্তি বাবদ জনপ্রতি ২ থেকে ৩ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে এমন কথা অধ্যক্ষ শুনেছেন বলে আমার দেশকে জানান।
আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ অভিভাবক ঐক্য ফোরামের অভিযোগ অনুযায়ী স্কুলের বর্তমান এডহক কমিটি গত ৭ ফেব্রুয়ারি বনশ্রী শাখায় ৪০০ ও মতিঝিল শাখায় ৬০০ জনসহ মোট ১ হাজার শিক্ষার্থী অবৈধভাবে ভর্তি করেছে। আর শিক্ষার্থী প্রতি ২ থেকে ৩ লাখ টাকা করে নেয়া হয়েছে। ওইদিন আমার দেশ-এর সরেজমিন পর্যবেক্ষণেও এ অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অভিভাবক ঐক্য ফোরামের পক্ষ থেকে ১৬ মার্চ প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির বর্তমান এডহক কমিটির পদত্যাগও দাবি করা হয়।
নিয়মের বাইরে শিক্ষক নিয়োগ : রাশেদ খান মেননের বিরুদ্ধে আরেকটি গুরুতর অভিযোগ হচ্ছে—এ দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বহির্ভূতভাবে একক সিদ্ধান্তে গভর্নিং বডির সদস্য নিয়োগ। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভিকারুননিসা নূন কমিটির চার অভিভাবক প্রতিনিধির মধ্যে দু’জনেরই কোনো সন্তান বর্তমানে এ প্রতিষ্ঠানে পড়ে না। একজনের মেয়ে এবার এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রার্থী। আর মাধ্যমিক পর্যায়ের একজন অভিভাবকের মেয়ে একাদশ শ্রেণীতে উঠায় তার সদস্যপদ ঢাকা শিক্ষা বোর্ড বাতিল করেছে। কিন্তু তারপরও তারা পদ থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন না। একই অবস্থা শিক্ষক প্রতিনিধির ক্ষেত্রেও। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) প্রতিনিধির পদে নীতিমালা লঙ্ঘন করে নিজের পিএস নাইমুল আজম খানকে নিয়োগ দিয়েছেন মেনন। একইভাবে তিনি ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের প্রতিনিধি পদেও নিয়মবহির্ভূতভাবে নিয়োগ দিয়েছেন। অধ্যক্ষ রোকেয়া আক্তার বেগমও এর সত্যতা স্বীকার করেছেন। সম্প্রতি ভিকারুননিসার আজিমপুর শাখায় পিএস নাইমুল আজম খানের স্ত্রীকে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
আইডিয়াল স্কুলের অভিভাবক ফোরামের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, ২০০১ সালের পর এখন পর্যন্ত আইডিয়াল স্কুলে কোনো ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচন হয়নি। এডহক কমিটির মাধ্যমেই স্কুল পরিচালনা হয়ে আসছে। ভুয়া অভিভাবক প্রতিনিধি, একই শিক্ষককে বারবার শিক্ষক প্রতিনিধি করে এ কমিটি গঠন করা হচ্ছে। ভর্তি-বাণিজ্য, টেন্ডার-বাণিজ্য করার জন্যই স্কুল কর্তৃপক্ষ নিয়মবহির্ভূতভাবে এ কমিটি গঠন করে আসছে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর স্কুলের এডহক কমিটিতে গত বছর জুনে ভুয়া অভিভাবক প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হয়। যাকে নিয়োগ দেয়া হয় তার কোনো সন্তান তখন এ স্কুলে পড়ত না। তাকে বৈধ করার জন্য এবার জানুয়ারিতে তার এক সন্তানকে স্কুলের প্রথম শ্রেণীতে ভর্তি করা হলেও বিধি অনুযায়ী তিনি অভিভাবক প্রতিনিধি হিসেবে যোগ্যতা অর্জন করতে পারেননি। আইডিয়াল স্কুলের গভর্নিং বডির নির্বাচনের কার্যক্রমের ক্ষেত্রে অনিয়মের বিষয়টি ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক ড. শ্রীকান্ত কুমার চন্দের ১৬ নভেম্বরের তদন্ত প্রতিবেদনেও বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।
অভিভাবকদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ১৮ মার্চ প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগম জাতীয় দৈনিকে গভর্নিং বডির নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করে বিজ্ঞাপন দেন। কিন্তু পরবর্তীকালে এক অভিভাবকের মামলার কারণে হাইকোর্ট থেকে নির্বাচনের ওপর স্থগিতাদেশ দেয়া হয়। সম্প্রতি ঢাকা শিক্ষা বোর্ড থেকে বর্তমান এডহক কমিটির মেয়াদ আরও ৪ মাস বাড়িয়ে দেয়া হয়। এর আগেও আরেক দফায় ৩ মাস মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিল। অথচ নীতিমালা অনুযায়ী এডহক কমিটি গঠনের ৬ মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করার কথা। বারবার নানা অজুহাতে গভর্নিং বডির নির্বাচন না করার পেছনে বর্তমান এডহক কমিটির হাত আছে বলে মনে করেন অভিভাবকরা। তাদের এসব অভিযোগ সত্য বলে আমার দেশকে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এ প্রতিষ্ঠানেরই একাধিক শিক্ষক।
ভিকারুননিসার অধ্যক্ষ অপসারণের চেষ্টা : পাঁচ শতাধিক ছাত্রীকে অবৈধভাবে ভর্তি করার পরও সভাপতির অন্যায় আবদার পূরণ না হওয়ায় কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রোকেয়া আক্তার বেগমকে অপসারণের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে এমপি রাশেদ খান মেননের বিরুদ্ধে। চাকরির মেয়াদ আরও প্রায় ১০ মাস থাকা সত্ত্বেও কোনো কারণ দর্শানো নোটিশ ছাড়াই অধ্যক্ষ রোকেয়া আক্তার বেগমকে পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছিল। তারপর আরও ৬ বয়োজ্যেষ্ঠ শিক্ষককে বাদ দিয়ে তার পছন্দমতো একজনকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষার দায়িত্ব দেয়া হয়। হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ উপেক্ষা করে ২৫ মার্চ নতুন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে দায়িত্ব পালন এবং তাকে সহযোগিতা করার জন্য সব শিক্ষক-কর্মচারীকে নির্দেশ দিয়েছেন মেনন। ২৭ মার্চ এক অফিস আদেশে নতুন অধ্যক্ষাকে সহযোগিতা না করলে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ারও হুমকি দিয়েছিলেন তিনি। নতুন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগের দিনই অধ্যক্ষ রোকেয়া আক্তার বেগমের রিটের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট একমাসের জন্য স্থগিতাদেশ জারি করেন। হাইকোর্টের রায় নাকি সভাপতির অফিস আদেশ মানবেন তা নিয়ে সে সময় বিভ্রান্তিতে পড়েন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা। এইচএসসি পরীক্ষার আগ মুহূর্তে এমন ঘটনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়।
অধ্যক্ষ রোকেয়া আক্তার বেগমের অভিযোগ, ভর্তি-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সব চাহিদা পূরণ করতে না পারায় হঠাত্ করে তাকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়। নতুন অধ্যক্ষকে দায়িত্ব বুঝিয়ে না দেয়ায় ২৬ মার্চ বিকালে টেলিফোনে তাকে রাশেদ খান মেনন অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। এমনকি ‘পুলিশ দিয়ে চুলের মুঠি ধরে কলেজ থেকে বের করে দেব’ এমন মন্তব্যও রাশেদ খান মেনন করেন বলে অভিযোগ করেছেন অধ্যক্ষ রোকেয়া আক্তার।
দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডে ব্যাঘাত সৃষ্টির অভিযোগ : অধ্যক্ষ রোকেয়া আক্তার বেগম বলেন, ভর্তি করা ছাড়া গত প্রায় দু’বছরে কোনো ধরনের উন্নয়নমূলক কাজ করেনি ভিকারুননিসার পরিচালনা কমিটি। তাদের একটাই কাজ ছিল ভর্তি করানো। শিক্ষকদের এখন পর্যন্ত নতুন পে-স্কেল অনুযায়ী বেতন দেয়া হয়নি। অথচ এ অজুহাতে ছাত্রীদের বেতন বাড়ানো হয়। সভাপতি রাশেদ খান মেনন প্রয়োজনীয় কাগজপত্রে স্বাক্ষর না করায় চলমান এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্র ফি, এপ্রিলের শিক্ষকদের বেতন শিট তৈরি, বিদ্যুত্ বিলসহ শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সব কাজই বর্তমানে আটকে আছে। এ বিষয়ে অধ্যক্ষ প্রশ্ন তুলেন নিয়মের বাইরে নিয়োগপ্রাপ্ত অভিভাবক প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করতে পারলে প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে আমার সঙ্গে তিনি কেন বৈঠক করতে পারছেন না। তাদের যেমন কোর্টের রায় রয়েছে, আমারও সেই রায় আছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এসব কাজ আপাতত বন্ধ রাখতে বলেছেন সভাপতি মেনন। তিনি অধ্যক্ষকে দিয়ে কোনো ধরনের কাগজপত্রে সই করাতে অফিস সহকারীকে নিষেধ করেছেন বলে অধ্যক্ষ রোকেয়া আক্তার জানিয়েছেন।
অন্যদিকে আইডিয়াল স্কুলে শিক্ষকদের কোচিং ব্যবসা, দলাদলিসহ নানা কারণে শ্রেণীকক্ষে পাঠদানের মান যে কমে যাচ্ছে সে বিষয়েও কোনো পদক্ষেপ সভাপতি হিসেবে রাশেদ খান মেনন নিচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে ওই প্রতিষ্ঠানের অভিভাবকদের পক্ষ থেকে।
দলীয়ভাবেও সমালোচিত : নিজের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডের কারণে মেননের দল বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির নেতাকর্মীরাও তার কঠোর সমালোচনা করছেন বলে জানা যায়। একাধিক নেতাকর্মী জানান, মহাজোটের পক্ষে নির্বাচনের প্রস্তুতির সময় থেকেই দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মানসিক একটি দ্বন্দ্ব তৈরি হয় তার। সারাদেশের কর্মিসভার ৯০ ভাগ লোকের মতামত উপেক্ষা করে কৌশলে পলিটব্যুরোর অনেক সদস্যের অনুপস্থিতে এক সভায় দলীয় প্রতীক হাতুড়ি মার্কার পরিবর্তে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। পরবর্তীকালে সংগঠনের আদর্শবিরোধী তার এ সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করে দলের সাবেক পলিটব্যুরো সদস্য হায়দার আকবর খান রণো, আবদুল আজিজ ও কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যাপক আবদুল সাত্তারসহ একাধিক নেতা দল ছেড়ে দেন। তাদের অভিযোগ, রাশেদ খান মেনন ওয়ার্কার্স পার্টির আদর্শ থেকে সরে গেছেন। এমনকি মেননের মতের সঙ্গে মিল না হওয়ায় বিমল বিশ্বাসকে সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে সরে যেতে হয়। নভেম্বরে অনুষ্ঠিত অষ্টম কংগ্রেসের সময় দলে নিজের এজেন্ডগুলো বাস্তবায়ন করতে আদর্শিক ও সাংগঠনিক নেতাদের বাদ দিয়ে পছন্দের লোকজনকে কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান দিয়েছেন।
এদিকে সংসদ সদস্য এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হওয়ার পর মেনন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি-বাণিজ্যসহ নানা অন্যায় কর্মকাণ্ডে জড়িত হয়ে পড়েন বলে নিজ দল থেকেও অভিযোগ উঠেছে। এসব কারণে দলের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে শুরু করে পলিটব্যুরো, জেলা-উপজেলার সবপর্যায়ের কমিটিতে তার কঠোর সমালোচনা করা হচ্ছে। ২৫ এপ্রিল ওয়ার্কার্স পার্টির ঢাকা মহানগর কমিটির এক বৈঠকে তার এসব কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে দু’জন সদস্য লিখিত অভিযোগ করে তা নিয়ে আলোচনার অনুরোধ জানান। জানা যায়, ১০ ও ১১ মে অনুষ্ঠিতব্য পলিটব্যুরোর সভায় এবং পরবর্তীকালে কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় মূল এজেন্ডা হিসেবে মেননের এসব কর্মকাণ্ড নিয়ে আলোচনা করা হবে। এছাড়া ১৪ মে অনুষ্ঠিতব্য ঢাকা মহানগর কমিটির সভারও মূল আলোচ্য বিষয় এটাই বলে দলীয় সূত্রে জানা যায়। মেননের নির্বাচনী এলাকায় চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপকর্মের পেছনেও তার যোগসূত্র রয়েছে বলে দল থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।নেতাকর্মীরা জানান, দলের সভাপতি রাশেদ খান মেননের এসব কর্মকাণ্ডের সঙ্গে পার্টির শতকরা ৯৯ ভাগ কর্মীর কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এসব অন্যায় কর্মকাণ্ডের দায়-দায়িত্বও দলের কোনো নেতাকর্মী নেবেন না। গঠনতন্ত্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে পার্টির সভাপতি নিয়োজিত হওয়াকে কেন্দ্র করে দলের ভবিষ্যত্ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কর্মীরা। সভাপতির কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ হয়ে সম্প্রতি ওয়ার্কার্স পার্টির নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির নেতাকর্মীরা সর্বসম্মতভাবে স্থানীয় সংগঠন বিলুপ্ত ঘোষণা করেছেন বলে জানা যা�
http://www.amardeshonline.com/pages/details/2010/05/01/29942

ডিসিসি’র ৭৬ প্রকল্পের কাজ ভাগাভাগি করে নিয়েছে আ’লীগ নেতাকর্মীরা : ঠিকাদারদের অভিযোগ রিটেন্ডার সরকারের আইওয়াশ মাত্র



30/04/2010

মাহমুদা ডলি
ডিসিসি’র প্রায় ৮ কোটি টাকার ৭৬টি প্রকল্পের কাজ ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। রিটেন্ডারের ওই কাজের ভাগাভাগিতে আবারও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুবলীগের সভাপতি মোঃ মহিউদ্দিন মহী নেতৃত্ব দিয়েছেন বলে জানা গেছে। ডিসিসি’র একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী জানান, অঞ্চল-১/র ওই ৭৬টি প্রকল্পের কাজ আগে যে প্রক্রিয়ায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে ভাগাভাগি করে দেয়া হয়েছিল ঠিক সেভাবেই কাজ বিতরণ করা হয়েছে। সরকার স্বচ্ছতা প্রকাশের জন্য রিটেন্ডার পুলিশ পাহারা ও নির্বাহী প্রকৌশলীর দফতরে টেন্ডার বাক্স রাখা এগুলো সবই শুধু আইওয়াশ। আগে যেভাবে ওয়ার্ডের এসব কাজ যুবলীগ, তরুণ লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের মধ্যে দু-একটি করে ভাগ করা হয়েছিল সেভাবেই রয়েছে বলে অভিযোগ করেন নগর ভবন ও অঞ্চল-১-এর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী।
গতকাল সকালে ডিসিসি’র অঞ্চল-১-এর সায়েদাবাদ অফিসে সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখা যায়, এবার গোপনে নয় প্রকাশ্যেই টেন্ডার বাক্স পাহারা দিচ্ছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। টেন্ডার বাক্সে শিডিউল জমা দেয়ার সময় বেলা ১২টা পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু ১১টা পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ছাড়া অন্য কোনো সাধারণ ঠিকাদার শিডিউল জমা দেননি। বেলা সোয়া ১১টার দিকে সাধারণ ঠিকাদার পরিচয় দিয়ে ৬টি শিডিউল জমা দেয় ধলপুরের মেসার্স হায়দার আলী কোম্পানি এবং ডিস্ট্রিলারি রোডের তনিমা এন্টারপ্রাইজ জমা দেয় ৩টি শিডিউল। জমাদানকারী এসব কোম্পানি জানায়, আগেরবারে যখন টেন্ডার হয়েছিল তখন তাদের শিডিউল জমা দেয়ার সুযোগই ছিল না। এবার সাহস করে জমা দিয়েছেন যদি স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় হয় তাহলে তারা পাবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এসব ঠিকাদার শিডিউল জমা দেয়ার পরপরই ৮৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম অনু ও একই ওয়ার্ডের যুবলীগ নেতা রাজার নেতৃত্বে শতাধিক নেতাকর্মীরা নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আসাদুজ্জামানের অফিস কক্ষের সামনে মহড়া দেয়। এ সময় তিনি অফিসেই ছিলেন। এসব নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে গোলাপবাগ তরুণ লীগের ইউনাইটেড কমার্শিয়াল কোম্পানি ও অমিয় এন্টারপ্রাইজসহ যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের কর্মীরা শিডিউল জমা দেন। এ সময় রাজা দৈনিক আমার দেশকে জানান, তিনি নিজে এবং তার পরিচিত ঠিকাদার ব্যবসায়ীরা শিডিউল জমা দিয়েছেন। কিন্তু এ সময়ে উপস্থিত অন্যান্য ডিসিসি’র কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানান, রাজা এবং আবুল কালাম অনু শিডিউল জমা দেননি শুধু টেন্ডার বাক্স নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য একটু পর পর মহড়া দিচ্ছেন। কতগুলো শিডিউল জমা করেছেন সে ব্যাপারে কোনোকিছুই জানাতে চাননি অঞ্চল-১-এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আসাদুজ্জামান। তবে ডিসিসি’র নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, আগের প্রক্রিয়া অনুযায়ী মহানগর যুবলীগের সভাপতি মহিউদ্দিন মহীর ফাতেমা এন্টারপ্রাইজ এবং আওয়ামী লীগের দলীয় চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের আনোয়ার এন্টারপ্রাইজ কাজগুলো পেয়েছে। তারা ১৬ পার্সেন্ট কমিশন গ্রহণ করে দলের পছন্দের লোকদের মধ্যে ভাগাভাগি করে দিয়েছেন বলে জানা গেছে এবং ডিসিসি’র কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার মধ্যে বিষয়টি গোপন রাখায় সাধারণ ঠিকাদাররা প্রতারিত হয়েছেন বলেও জানান। এ ব্যাপারে জানার জন্য যুবলীগ নেতা মহীউদ্দিন মহীর ০১৯১৫৬০১৮০৬ নম্বরে ফোন করলে আমার দেশের সঙ্গে কোনো কথাই বলবেন না বলে জানান। বিষয়টি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আবুল কালাম আজাদের কাছে জানতে চাইলে তার হাতে সময় নেই বলে অফিস রুম থেকে চলে যান। ডিসিসি’র সূত্র জানায়, ২০০৯-১০ অর্থবছরের বাজেটের অঞ্চল-১-এর জন্য ৭৬টি প্রকল্পের কাজে ৭ কোটি ৩৫ লাখ টাকার টেন্ডার আহ্বান করা হয়। দুই মাস আগে প্রথমবারের টেন্ডারের ওই কাজ ভাগবাটোয়ারা করে নেন আওয়ামী লীগের কর্মীরা। এ ব্যাপারে আপত্তি জানিয়ে ঢাকা সিটি করপোরেশনের মেয়রের কাছে আবেদন করেন ওই অঞ্চলের কমিশনার ও অন্যান্য সাধারণ ঠিকাদার। এ ঘটনায় ডিসিসি মেয়র সাদেক হোসেন খোকা ওই টেন্ডার বাতিল করে দেন এবং রিটেন্ডারের জন্য রেখে দেন। পরবর্তী সময়ে চলতি মাসেই আবার টেন্ডার আহ্বান করলেও তা আইওয়াশ বলে জানান সাধারণ ঠিকাদার।
http://www.amardeshonline.com/pages/details/2010/04/30/29731

চট্টগ্রামে এমপির ছেলের বিরুদ্ধে আবারও জমি দখলের অভিযোগ



28/04/2010

চট্টগ্রাম ব্যুরো
চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগ এমপি নুরুল ইসলাম বিএসসির ছেলে মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে চান্দগাঁও এলাকায় আবারও অবৈধভাবে জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ ও আনসারের সহায়তায় এবার তিনি এক নিরীহ ব্যবসায়ীর ৩ কোটি টাকা মূল্যের ২০ গণ্ডা জমি দখল করেছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। জমিটি দখলের সময় হামলায় আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন। এ নিয়ে থানায় গিয়েও কোনো প্রতিকার পাননি ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী পরিবার। উল্টো তাদের বিরুদ্ধেই মামলা নিয়েছে পুলিশ। মামলা ও হামলার ভয়ে ব্যবসায়ী পরিবারের সদস্যরা এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
এর আগে একই এলাকার প্রবাসী আবু বক্করের একটি জমি দখলেরও অভিযোগ উঠেছিল তার বিরুদ্ধে। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে মুজিবুল হক বলেছেন, ক্রয়সূত্রে মালিকানা থাকায় তারা জমির দখল বুঝে নিয়েছেন। কারও জমি তিনি অবৈধভাবে দখল করেননি।
নগরীর চান্দগাঁও থানাধীন মৌলভী পুকুরপাড় এলাকার জিকে স্টিল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তছকির আহাম্মদ জানান, তার দুই ছোট ভাই মোঃ আজিজ ও আজাদ হোসেন দীর্ঘদিন ধরে কুয়েতে সুনামের সঙ্গে ব্যবসা করে আসছেন। তাদের কষ্টার্জিত টাকা দিয়ে তিনি ২০০৪ সালে মৌলভী .পুকুরপাড় এলাকায় প্রায় এক একর জমিতে জিকে স্টিল মিল প্রতিষ্ঠা করেন।
তছকির জানান, গত মাসে তিনি স্টিল মিলের পাশে মরহুম আবুল খায়েরের ছেলে মোঃ ইসহাকের কাছ থেকে ১৩ গণ্ডা এবং মরহুম মফিজুর রহমানের ছেলে হাজি মোঃ কামাল উদ্দিনের কাছ থেকে ৭ গণ্ডাসহ মোট ২০ গণ্ডা জমি কিনে নেন। এই জমি কেনার পর থেকে এমপি নুরুল ইসলাম বিএসসির ছেলে মুজিবুর রহমান জমিটি দখলে মরিয়া হয়ে ওঠেন। জমিটি নুরুল ইসলাম বিএসসির সানোয়ারা গ্রুপের কারখানার পেছনে কয়েকশ’ গজ দূরে। দখল প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে মুজিব প্রথমে জমিটিতে একটি আনসার ক্যাম্প স্থাপন করেন। পরে গত ২২ এপ্রিল দিনের বেলায় তিনি আনসার, পুলিশ ও সানোয়ারা গ্রুপের নিরাপত্তারক্ষীদের সহায়তায় ২০ গণ্ডা জমি অবৈধভাবে দখল করে নেন।
তছকির অভিযোগ করেন, জমি দখলের সময় তারা বাধা দিলে মুজিবের লোকজন আনসার ও পুলিশের সহায়তায় তাদের জিকে স্টিল মিলে হামলা চালায়। এ সময় হামলায় তিনি নিজে এবং তাদের কারখানার ১০/১২ কর্মচারী আহত হন। ঘটনার পর তারা চান্দগাঁও থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। উল্টো সানোয়ারা গ্রুপের এক কর্মকর্তা বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় পুলিশ দু্জনকে গ্রেফতার করে নিয়ে গেছে। প্রতিদিনই পুলিশ তাদের হয়রানি করছে।
গতকাল সরেজমিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, সানোয়ারা গ্রুপের কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী ও আনসার জমিটি পাহারা দিচ্ছে। সেখানে তারা কাউকে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। টিনের বেড়া দিয়ে জমিটি ঘিরে রেখে নির্মাণ কাজের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। এই প্রতিবেদক জমিতে গেলে আনসাররা ছবি তুলতে নিষেধ করে। অবশ্য পরে সানোয়ারা গ্রুপের কয়েকজন কর্মচারী ছবি তোলার অনুমতি দেয়।
তছকিরের ভাই কুয়েত প্রবাসী মোঃ আজিজ টেলিফোনে কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমাদের দীর্ঘদিনের পরিশ্রমের টাকা দিয়ে জমিটি কিনেছি। এমপি নুরুল ইসলাম বিএসসির ছেলে কয়েকশ’ লোক নিয়ে এটা এক ঘণ্টার মধ্যেই দখল করে নিয়েছে।
তিনি বলেন, এ ব্যাপারে আমরা কুয়েতের বাংলাদেশ অ্যাম্বাসির মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বরাবরে অভিযোগ করেছি। থানা মামলা না নেয়ায় আদালতে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
অভিযোগের ব্যাপারে নুরুল ইসলাম বিএসসি এমপির ছেলে সানোয়ারা গ্রুপের ডিরেক্টর জেনারেল মুজিবুর রহমানের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, তছকিরের সঙ্গে আমাদের জমি নিয়ে কোনো বিরোধ নেই। আমরা হারুন নামের একজনের কাছ থেকে ২৪ গণ্ডা জমি কিনেছি। গত ২২ এপ্রিল আমরা কেনা জমি বুঝে নিতে গেলে তছকিরের লোকজন আমাদের আনসার ও নিরাপত্তারক্ষীদের ওপর হামলা করে। এতে কয়েকজন আহত হয়েছে। এ ঘটনায় আমরা মামলা করেছি।
তিনি বলেন, তছকির যদি জমির প্রকৃত মালিক হয়ে থাকেন তাহলে তিনি দেওয়ানি মামলা করতে পারেন। আইনের পথ তাদের সামনে খোলা রয়েছে। এর আগে একই এলাকার হাজী আবু বক্করের একটি জমি দখল করার যে অভিযোগ উঠেছে সে সম্পর্কে মুজিব বলেন, ওই জমিটিও আমরা বৈধভাবে কিনেছি।

http://www.amardeshonline.com/pages/details/2010/04/29/29676

ফয়’স লেক কনকর্ড পার্ক অবরোধ আ’লীগ ছাত্রলীগের

28/04/2010
চট্টগ্রাম ব্যুরো
আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের অব্যাহত সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির কারণে চট্টগ্রামের ফয়’স লেকে দেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র কনকর্ড অ্যামিউজমেন্ট ওয়ার্ল্ড বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। গত ৩ মাস ধরে সরকারদলীয় ক্যাডাররা অব্যাহতভাবে সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজি চালিয়ে যাচ্ছে। গতকালও অর্ধ-শতাধিক সন্ত্রাসী ফয়’স লেকের আশপাশে সশস্ত্রভাবে ঘোরাফেরা করে। স্থানীয় লোকজন ও ব্যবসায়ীরা সবাই এখন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। এর আগে সোমবার ক্যাডাররা কনকর্ডের ৪৫০ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে মূল ফটক বন্ধ করে অবরুদ্ধ করে রাখে। লাঞ্ছিত করে দুই কর্মকর্তাকে। বিনোদন কেন্দ্রে ঢুকতে দেয়নি কোনো পর্যটককে। ফলে দেশ-বিদেশ থেকে আসা শত শত পর্যটক দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে চলে যান। আওয়ামী লীগ নেতা আলমগীর ও আনসার আলীর নেতৃত্বে এই কর্মকাণ্ড চালায় ক্যাডাররা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, কয়েক মাস আগে বিনোদন কেন্দ্রের কারপার্কিংয়ের জায়গায় আওয়ামী লীগের অফিস স্থাপন করে দর্শনার্থীদের গাড়ি রাখায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়। প্রায়শই তারা ফয়’স লেকের অভ্যন্তরে বিনা টিকিটে প্রবেশ করে দলবল নিয়ে। কনকর্ড কর্তৃপক্ষ আয়োজিত বিশেষ দিনে ৩০০ থেকে ৫০০ টিকিট ফ্রি হিসেবে দেয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের ওপর চাপ সৃষ্টি করে। ক্যাডারদের ভয়ে কর্মকর্তারা প্রতিটি অনুষ্ঠানের টিকিট তাদের ফ্রি দিয়ে আসছেন। এসব টিকিট তারা দর্শনার্থীদের কাছে বিক্রি করে। তদুপরি দর্শনার্থী তরুণীদের উত্ত্যক্ত করা ছাড়াও এরা প্রতিনিয়ত ছিনতাই করছে পর্যটকদের। সোমবার উল্লিখিত দুই সন্ত্রাসীর নেতৃত্বে একদল সশস্ত্র ক্যাডার জানিয়ে দিয়েছে, প্রতিদিনের আয়ের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ না দিলে তারা পার্ক চলতে দেবে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুর্িলশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সন্ত্রাসীরা প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় আছে বিধায় আমরা তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছি না। তবে ঊর্ধ্বতন মহলে সন্ত্রাসীদের তত্পরতার কথা জানানো হয়েছে।
কনকর্ড কর্তৃপক্ষ জানান, কতিপয় আওয়ামী লীগ নেতার ইন্ধনে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সশস্ত্র ক্যাডাররা ফয়’স লেক এলাকায় আওয়ামী লীগের একটি অফিস স্থাপন করে প্রতিনিয়ত সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালাচ্ছে। বর্তমানে তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

http://www.amardeshonline.com/pages/details/2010/04/28/29502

ঢাবির চার অধ্যাপক চাকরিচ্যুত

27/04/2010
বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ অধ্যাপককে চাকরিচ্যুত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। রোববার দিবাগত রাতে সিন্ডিকেট সভায় এ ৪জনকে চাকরিচ্যুত করা হয়। তারা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সাবেক ডিন ও উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. এরশাদুল বারী, রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক ড. আতাউর রহমান, ব্যবসা প্রশাসন ইন্সটিটিউটের (আইবিএ) অধ্যাপক ড. হামিদ উদ্দিন ও বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোঃ আমিনুর রহমান। এদের মধ্যে প্রথম দুজন বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত সাদা দলের নেতা। সিন্ডিকেট বৈঠকে সাদা দলের ৩ সদস্য এ সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তাদের আপত্তি জানিয়ে নোট অব ডিসেন্ট দেন। কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে তাদের এই আপত্তি সত্ত্বেও ৪অধ্যাপককে চাকরিচ্যুত করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে শিক্ষা ছুটিতে গিয়ে যথাযথ অনুমোদন ছাড়া পরবর্তীতে অনুপস্থিত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে সিন্ডিকেট সদস্য সাদা দলের নেতা ও শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি ড. সদরুল আমিন বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু শিক্ষক শিক্ষা ছুটির নামে ৮-১০ বছর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকলেও তাদের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত না নিয়ে এক বছরেরও কম সময়ে অনুপস্থিত থাকার অজুহাতে ভিন্নমতাবলম্বী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে এ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এটা ষড়যন্ত্রমূলক, দুঃখজনক এবং অগ্রহণযোগ্য।

http://www.amardeshonline.com/pages/details/2010/04/27/29374

ঢাকা বিভাগের খাদ্য অধিদফতরে নিয়োগ সমাচার : দলীয় প্রার্থীরা নির্বাচিত না হওয়ায় ফল বাতিল

27/04/2010

কাদের গনি চৌধুরী
মন্ত্রী, এমপি ও সরকারি দলের প্রভাবশালীদের দেয়া তালিকা মতো দলীয় লোকদের চাকরি পাইয়ে দেয়ার ব্যবস্থা না করায় খাদ্য অধিদফতরের তৃতীয় শ্রেণীর ১০ ক্যাটাগরির শূন্যপদে নিয়োগে ঢাকা বিভাগের পরীক্ষার ফলাফল বাতিল করে দিয়েছে সরকার। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে খাদ্য মন্ত্রণালয় ও খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে সরকারি দলের সঙ্গে জড়িত নন এমন যোগ্য প্রার্থীদের মধ্যে। প্রার্থীদের অনেকে গতকাল খাদ্য অধিদফতর ও ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে গিয়ে কী হতে যাচ্ছে এসব বিষয়ে খোঁজ-খবর নেন।
ঢাকা বিভাগে খাদ্য অধিদফতরের তৃতীয় শ্রেণীর ১০ ক্যাটাগরির শূন্যপদে নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফল বাতিলের নেপথ্য কারণ অনুসন্ধানে জানা যায়, পরীক্ষা চলাকালে মন্ত্রী, এমপি ও স্পিকারের কার্যালয় থেকে চাকরি দেয়ার জন্য প্রচুর তদবির আসে। শুধু টেলিফোনেই নয়, অনেক মন্ত্রী-এমপি ডিও লেটারও পাঠান। কিন্তু নিয়োগ পরীক্ষা কমিটির সদস্যরা কোনো তদবিরই আমলে নেননি। এ খবর জানাজানি হওয়ার পর মন্ত্রী-এমপিরা ফলাফল বাতিলের জন্য চাপ সৃষ্টি করতে থাকেন।
সূত্র জানায়, মৌখিক পরীক্ষার জন্য গঠিত কমিটির প্রধান থাকার কথা ছিল ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার ড. শওকত হোসেনের। কিন্তু পরীক্ষা কার্যক্রম যখন শুরু হয় সে সময় ড. শওকত ছিলেন বিদেশে। তাই অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মোঃ মাসুদুর রহমানকে মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণের দায়িত্ব দেয়া হয়। এ কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন আরসি ফুড, পিডব্লিউডির এডিশনাল চিফ ইঞ্জিনিয়ার, কৃষি অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক ও ইডেন কলেজের একজন প্রফেসর। কমিটির সব সদস্য মিলে সিদ্ধান্ত নেন যে, কোনো চাপের কাছে তারা নত না হয়ে যোগ্য প্রার্থীদের নির্বাচিত করবেন। সেভাবেই তারা মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণ শেষে ফলাফল তৈরি করেন। এ ফলাফল তৈরির দুইদিন পরই এলপিআরে যান পরীক্ষা কমিটির প্রধান অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মোঃ মাসুদুর রহমান। এরই মধ্যে বিভাগীয় কমিশনার ড. শওকত হোসেন দেশে ফিরে এলে পরীক্ষার ফলাফল তার হাতে তুলে দেন তারা। এদিকে সরকারের বিভিন্ন মহলের চাপে ওই ফলাফলের ব্যাপারে আপত্তি জানিয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি লিখেন ড. শওকত হোসেন। এতে বিপাকে পড়ে যায় মন্ত্রণালয়। চাপ আসে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে। এ ব্যাপারে ক্ষমতাসীনদের দাবি হচ্ছে তাদের দলের কারও চাকরি হয়নি। কাজেই এ ফলাফল সঠিক হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর নিজ জেলা গোপালগঞ্জের নেতারা অভিযোগ করেন যে, তাদের জেলা থেকে আওয়ামী লীগের যারা পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন তাদের কারও চাকরি হয়নি। তবে মৌখিক পরীক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানান, ক্ষমতাসীনদের পক্ষ থেকে যাদের ব্যাপারে অনুরোধ এসেছে তারা সবাই তদবিরে চাকরি হবে এ ব্যাপারে আগে থেকেই শতভাগ নিশ্চিত ছিলেন। ফলে প্রস্তুতি না নেয়ায় তারা ভাইভা বোর্ডে খুবই খারাপ করেন।
বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, খাদ্যমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক এ নিয়োগের ব্যাপারে কোনো প্রভাব না খাটানোর কারণে কমিটি অত্যন্ত নিরপেক্ষভাবে ফলাফল তৈরি করে। বিশেষ করে কমিটির প্রধান অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মোঃ মাসুদুর রহমান এলপিআরে যাওয়ার প্রাক্কালে কোনো অনৈতিক কাজ করতে চাননি। কমিটির অন্য সদস্যরাও তাকে পুরোপুরি সাপোর্ট দেন। তাই সরকারের পক্ষ থেকে বারবার চাপ দেয়ার পরও কমিটি ফলাফল পরিবর্তন করতে রাজি হয়নি।
খাদ্য অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, খাদ্য বিভাগে চাকরি দেয়ার কথা বলে সরকারি দলের লোকেরা প্রচুর ঘুষ নেয়। তাদের তদবিরে কাজ হয়নি জানতে পেরে বিভিন্ন মহলে তারা নানা প্রচারণা চালান। বিশেষ করে তারা সরকারের বিভিন্ন মহলে প্রচার করতে থাকেন যে, পরীক্ষা কমিটি রাজনৈতিক কারণে ও ঘুষ নিয়ে আওয়ামী লীগ সর্মথকদের চাকরি থেকে বঞ্চিত করেছে। সরকারের উচ্চ মহলকে এটি তারা বিশ্বাসও করাতে পেরেছেন।
সূত্র জানায়, সারাদেশে খাদ্য অধিদফতরে লোক নিয়োগে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে ঢাকা বিভাগে তেমন কোনো অভিযোগ ছিল না। এ বিভাগে অনিয়মের অভিযোগ করছে কেবল সরকারি দলের লোকেরা। অন্যান্য বিভাগে লোক নিয়োগে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু ঢাকা ছাড়া অন্যান্য বিভাগে লোক নিয়োগে ক্ষমতাসীন দলের ইচ্ছা পূরণ হওয়ায় সেসব বিভাগের মৌখিক পরীক্ষার ফল বাতিল করা হয়নি।
পরীক্ষা কমিটির প্রধান সাবেক অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মোঃ মাসুদুর রহমান আমার দেশকে বলেন, এখনও আমি সরকারি চাকরিতে কর্মরত আছি। তাই সংস্থাপন সচিবের অনুমতি ছাড়া মিডিয়ার সঙ্গে কোনো কথা বলতে পারি না, তবে এতটুকু বলব কমিটি মন্ত্রণালয়ের নিয়ম-কানুন, বিধি-বিধান ও গাইড লাইন মেনে অত্যন্ত নিরপেক্ষভাবে অর্পিত দায়িত্ব পালন করেছে।
ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার ড. শওকত হোসেন বলেন, এ পরীক্ষা নেয়ার সময় আমি দেশের বাইরে ছিলাম। দেশে ফেরার পর প্রচুর অভিযোগ আসে। অভিযোগের কথাসহ আমি ফলাফল পাঠিয়ে দিই মন্ত্রণালয়ে। এরপর মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নিয়েছে ফলাফল বাতিলের। আপনার কাছে অনিয়ম হয়েছে বলে মনে হয় কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অভিযোগ এবেবারেই অহেতুক মনে হয়নি।
খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ২০০৪ সাল থেকে অধিদফতরের ১০টি ভিন্ন পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়। প্রথমবার পে-অর্ডার এবং দ্বিতীয়বার দরখাস্ত খোয়া যাওয়ার ঘটনায় পরীক্ষা নেয়া সম্ভব হয়নি। ২০০৬ সালে আবার নিয়োগের জন্য দরখাস্ত চাওয়া হয়। পরীক্ষাও সম্পন্ন হয়। তবে সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে নিয়োগ দিতে না পারায় শেষ পর্যন্ত তাও বাতিল করা হয়। ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় উদ্যোগ নেয়া হলেও নিয়োগ শেষ করা যায়নি। বর্তমান সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর দ্রুত নিয়োগ দেয়ার উদ্যোগ নেয়। নতুন করে দরখাস্ত আহ্বানের পরিবর্তে বিগত সময়ে নেয়া আবেদনগুলোর ভিত্তিতে ২০০৯ সালের ২৪ এপ্রিল লিখিত পরীক্ষা শেষ করা হয়। ওই পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয় গত বছরের ২৩ অক্টোবর। এর প্রায় দেড় মাস পর দেশের ছয়টি বিভাগে মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

http://www.amardeshonline.com/pages/details/2010/04/27/29366