দায়সারা তদন্ত | বিজি প্রেসের প্রতিবেদন অনেকটা 'আইওয়াশ'সাবি্বর নেওয়াজ | Shamokal শুক্রবার | ২৩ জুলাই ২০১০ | ৮ শ্রাবণ ১৪১৭ | ১০ শাবান ১৪৩১
সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় বিজি প্রেসের গঠিত তদন্ত কমিটি গতকাল দায়সারা গোছের একটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। প্রতিবেদনে তারা বলছে_ যারা পুলিশের হাতে আটক আর যারা পলাতক তারা প্রশ্নপত্র ফাঁস করে থাকতে পারেন। প্রশ্ন ফাঁসে জড়িতদের কাউকে সুস্পষ্টভাবে চিহ্নিত করতে পারেনি এ কমিটি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, 'বিজি প্রেসের গোপনীয় শাখার কম্পোজিটর শহিদুল ইসলাম ফকির আটক হলে সে বলতে পারবে কারা প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত।' প্রশ্ন ফাঁস রোধে এ কমিটি ১৩ দফা সুপারিশ পেশ করেছে। এদিকে পুলিশের রিমান্ডে গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে বিভিন্ন তথ্য বেরিয়ে আসাসহ বিজি প্রেস এবং বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা উদ্ধারের পরও বিজি প্রেসের এ তদন্ত কমিটি কেন সুনির্দিষ্টভাবে কাউকে শনাক্ত করতে পারল না তা
নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। বিজি প্রেসের পাঁচ সদস্যের কমিটির এ তদন্ত 'আইওয়াশ' বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। অন্যদিকে যে মন্ত্রণালয়ের অধীন বিজি প্রেস সেই মন্ত্রণালয় তদন্ত কমিটি গঠনের কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায়ও নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।
প্রতিবেদনটি প্রণয়নের কাজ গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে শেষ করা হয়। রাত সাড়ে ৯টায় বিজি প্রেসের মহাপরিচালক আ ল ম আবদুর রহমানের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। মহাপরিচালক রোববার এ প্রতিবেদন সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে পারেন বলে জানা গেছে।
ভবিষ্যতে প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা যেন না ঘটে সেজন্য সরকারের কাছে পেশ করা ১৩ দফা সুপারিশে সাধারণ পুলিশের বদলে এখন থেকে আর্মড পুলিশ অথবা বিডিআর সদস্যদের দিয়ে বিজি প্রেসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়। এছাড়া ভবিষ্যতে বিজি প্রেসের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও সম্প্রসারণ, অ্যানালগ পদ্ধতির বদলে ডিজিটাল পদ্ধতির সিসি টিভি চালু, গোপনীয় শাখার জন্য নতুন ও স্বতন্ত্র প্রেস মেশিন কেনা, এ শাখায় প্রথম শ্রেণীর একজন সার্বক্ষণিক কর্মকর্তা রাখা এবং বহিরাগত মুদ্রণ ও বাঁধাই শ্রমিকদের দিয়ে ভবিষ্যতে কোনো কাজ না করানোর সুপারিশ করা হয়েছে।
প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় আরও একটি তদন্ত কমিটি কাজ করছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ কমিটি গঠন করেছে। মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) এস এম গোলাম ফারুকের নেতৃত্বে গঠিত ছয় সদস্যের এ তদন্ত কমিটি আগামী রোববার দুপুর আড়াইটায় আনুষ্ঠানিকভাবে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের কাছে তাদের তদন্ত প্রতিবেদন পেশ করবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এ কমিটির এক সদস্য সমকালকে জানান, তাদের কমিটির প্রতিবেদন প্রায় চূড়ান্ত। তাদের তদন্তে বিজি প্রেস কর্তৃপক্ষের গাফিলতিই অতি প্রকটভাবে ধরা পড়েছে। তাই প্রশ্ন ফাঁসের জন্য বিজি প্রেস কর্তৃপক্ষকেই দায়ী করা হতে পারে।
গত ৮ জুলাই রাতে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়টি রংপুরে ধরা পড়ে। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে এরই মধ্যে বিজি প্রেসের পাঁচ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বরখাস্ত করা হয়েছে। পরে ঘটনা তদন্তের জন্য পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বিজি প্রেস কর্তৃপক্ষ। এ তদন্ত কমিটির প্রধান বিজি প্রেসের পরিচালক (প্রশাসন) আবুল কাসেম। সদস্যরা হলেন, উপ-পরিচালক (যুগ্ম সচিব) মোঃ মুজিবুর রহমান, উপ-পরিচালক নিতাইপদ দাস, সিকিউরিটি প্রিন্টিং প্রেসের (জিপি প্রেস) উপ-পরিচালক মোঃ আবু ইউনুস এবং সদস্য সচিব বিজি প্রেসের সহকারী পরিচালক আতিকুল ইসলাম। এ কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনে দোষীদের সঠিকভাবে চিহ্নিত করার বিষয়টি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তদন্তের ওপর নির্ভর করছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বিজি প্রেসের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোসহ নানা বিষয়ে মোট ১৩টি সুপারিশ করেছে এ কমিটি।
তবে বিজি প্রেস কর্তৃপক্ষ তাদের পাঁচজন কর্মচারীকে বরখাস্ত করা এবং গত ১২ জুলাই দুপুরে খোদ বিজি প্রেস থেকে নগদ ২৮ লাখ টাকাসহ ফর্মা প্রুফ প্রেসম্যান মোঃ আবদুল জলিল (৫০) নামে এক কর্মচারীকে পুলিশ গ্রেফতার করার পরও এ তদন্ত কমিটি সুনির্দিষ্টভাবে দোষীদের চিহ্নিত করতে না পারায় নানা প্রশ্ন উঠেছে। কমিটির সদস্যরা কোনোভাবে 'ম্যানেজ' হয়ে গেছেন কি-না তা নিয়ে বিজি প্রেসের সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে শুরু হয়েছে গুঞ্জন।
'কেন প্রকৃত দোষীদের আপনারা চিহ্নিত করতে পারলেন না?' জানতে চাইলে এ কমিটির সদস্য উপ-পরিচালক মোঃ মুজিবুর রহমান গত রাতে সমকালকে বলেন, 'সিসি টিভি কাজ না করায় এবং কোনো প্রত্যক্ষদর্শী না থাকায় সন্দেহাতীতভাবে কাউকে দোষী বলে চিহ্নিত করা যায়নি। তবে এ ঘটনায় রংপুরে মামলা হয়েছে। মামলার পুলিশি তদন্ত চলছে এবং এতে প্রকৃত দায়ী ব্যক্তিরা বের হয়ে আসবে।'
তদন্ত কমিটির সদস্য-সচিব ও বিজি প্রেসের সহকারী পরিচালক আতিকুল ইসলাম গতরাতে সমকালকে বলেন, 'আমরা যে ৪৭ জনের সাক্ষ্য নিয়েছি (৩০ জনের মৌখিক, ১৭ জনের লিখিত) তাদের কেউ-ই বলেননি যে, তাদের জানামতে প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে কে বা কারা দায়ী। তাই প্রকৃত অপরাধীকে খুঁজে বের করা খুব কঠিন ছিল। তবে আমরা মনে করি কম্পোজিটর শহিদুল ইসলাম ফকির গ্রেফতার হলে সব বেরিয়ে আসবে।'
চূড়ান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিজি প্রেসের নিরাপত্তা ব্যবস্থা দুর্বল হওয়ার কারণেই প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনাটি ঘটেছে। গোপনীয় শাখায় বসানো ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরাগুলো এ শাখার পুরো চিত্র ধারণ করতে পারে না। আর সিসি টিভির ক্যাসেট সরবরাহ করে থাকে প্রশ্ন ছাপার জন্য দেওয়া পরীক্ষা গ্রহণকারী কর্তৃপক্ষ। সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ছাপার সময় বিজি প্রেসকে কোনো ক্যাসেট সরবরাহ করেনি 'মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর' (মাউশি)। ফলে এ প্রশ্ন ফাঁসের কোনো রেকর্ড নেই কর্তৃপক্ষের কাছে। এছাড়া প্রশ্নপত্রের একাধিক সেট পাণ্ডুলিপি সরবরাহ করা হলে প্রশ্ন ফাঁসের ঝুঁকি তাতে কমে যায়। মাধ্যমিক শিক্ষক নিয়োগের জন্য প্রশ্নপত্রের একটি মাত্র পাণ্ডুলিপিই মাউশি থেকে বিজি প্রেসকে সরবরাহ করা হয়েছিল।
তদন্ত প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বিজি প্রেসের সাবেক উপ-পরিচালক মাসুম খানের দায়িত্বে গুরুতর অবহেলা রয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের সঙ্গে একই দিন জাতীয় সংসদের জন্য চলতি বাজেটের 'অর্থবিল' ছাপানো হয়। অর্থবিলের কপির সঙ্গে প্রশ্নপত্র বাইরে চলে গেছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। বিজি প্রেসে ছাপার মেশিন স্বল্পতা রয়েছে। অভাব রয়েছে লোকবলেরও। ফলে কাজের চাপ বেশি হলে বা জরুরি কাজের সময় বাইরের মেশিন আর লোকবল নিয়ে কাজ চালাতে হয়। বাইরের জনবলের মাধ্যমেই গোপনীয় শাখার গোপনীয়তা ফাঁস হয়ে যায়। এছাড়া গোপনীয় শাখায় কর্মরতদের নিয়োগের সময় পুলিশ ভ্যারিফিকেশন সঠিকভাবে করা হয়নি। ফলে তাদের চরিত্র ও নৈতিকতা নিয়েও প্রশ্ন থেকে যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তদন্ত কমিটির এক সদস্য বলেন, তদন্ত কমিটির রিপোর্টের বাইরে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কারণ রয়েছে। বিভিন্ন কারণে এ তদন্ত কমিটি রিপোর্টে সেসব বিষয় উল্লেখ করতে পারেনি। বিজি প্রেস রাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান হলেও দীর্ঘদিন ধরে এটি চলছিল বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে।
সমকালের অনুসন্ধানে জানা যায়, বিজি প্রেসের কর্মচারী ইউনিয়ন (সিবিএ) অত্যন্ত শক্তিশালী একটি সংগঠন। কর্তৃপক্ষের ওপর তাদের প্রভাব অত্যন্ত বেশি। বিজি প্রেসে কর্মচারী নিয়োগ, গোপনীয় শাখায় পছন্দের ব্যক্তিকে বদলি, প্রেসের কাগজ-কালি কেনাসহ নানা প্রক্রিয়ায় কর্মচারী ইউনিয়নের নেতারা সরাসরি জড়িত। পুলিশের হাতে আটক বিজি প্রেসের কম্পোজিটর মোস্তফা, লাবণী ও ফর্মা প্রুফ প্রেসম্যান জলিল সিবিএর শীর্ষ নেতাদের অত্যন্ত কাছের। তাই তদন্ত প্রতিবেদনে তাদের নাম উল্লেখ করে বিজি প্রেসের কর্মকর্তারা সিবিএর হাতে 'অপমানিত ও লাঞ্ছিত' হতে চাননি। তাই গত দু'দিনে একাধিকবার তদন্ত প্রতিবেদন লেখা ও তা কাটাছেঁড়া করা হয়। শেষতক 'দায়ী কারা' শীর্ষক অনুচ্ছেদটিই বাদ দেওয়া হয়। বিজি প্রেসের একাধিক সূত্র জানায়, তদন্ত কমিটি বিজি প্রেসের মহাপরিচালকের কক্ষে বসে তার পরামর্শ মতেই তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করেছে। এরপর আবার তার কাছেই জমা দেওয়ার প্রস্তুতি নেয়।
সমকালের লালমনিরহাট প্রতিনিধি জানান, প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে গ্রেফতারকৃত লালমনিরহাট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মতিয়ার রহমান সাজুকে গতকাল চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। গ্রেফতারের পর বেরিয়ে আসছে অর্থ কেলেঙ্কারির নানা তথ্য।
জানা গেছে, জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার গোড়ল ইউনিয়নের মোঃ ধন মামুদ মিয়ার ছোট ছেলে মতিয়ার রহমান সাজু ১০ বছর ধরে শিক্ষকতা করেন। ২০০৬ সালের ২৩ ডিসেম্বর লালমনিরহাট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে প্রথম চাকরিতে যোগদান করেন। অবৈধ উপায়ে নিজের চাকরি নিশ্চিত করতে বিভিন্ন জনের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন সাজু। এক পর্যায়ে বিজি প্রেসের কয়েকজন কর্মচারীর সঙ্গে পরিচয় হলে তাদের এজেন্ট হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি। শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে সাজু পুরো জেলায় তার নিজস্ব এজেন্ট তৈরি করেন। বিগত ৩ বছরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস করে প্রচুর টাকা কামিয়ে নেন মতিয়ার। ২০০৯ সালে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র একদিন আগেই চলে আসে তার কাছে। সাজু এক সেট প্রশ্ন বিক্রি করেন ১ লাখ টাকা করে। ২০০৯ সালে সাজু তার দুই বোন তানজিলা আক্তার শিউলি, সানজিনা আক্তার শেফালী ও তার বড় ভাই ফজলুল হকের পুত্রবধূ শাহিনা এক পরিবারেই ৩ জনকে সরকারি চাকরি পাইয়ে দেন। বিষয়টি সে সময় এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত শিক্ষক মতিয়ার রহমান সাজু গত বছর রংপুর শহরের হনুমানতলায় ১৬ লাখ টাকায় একটি পাকা বাড়ি কিনেছেন। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে কালিগঞ্জ উপজেলার শিয়াল খোওয়া সিনেমা হল এলাকায় ৮ লাখ টাকায় কিনেছেন আরও একটি বাড়ি। গোড়ল বিলে ১টি মাছের খামার কিনেছেন তিনি।
সমকালের রংপুর অফিস জানায়, সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস সিন্ডিকেটের সদস্য শিক্ষক মতিয়ার রহমান সাজুর অ্যাকাউন্টে ৮ লাখ টাকা ও বিজি প্রেসের কর্মচারী এটিএম মোস্তফার অ্যাকাউন্টে আরও ২৩ লাখ টাকার সন্ধান পেয়েছে পুলিশ। বুধবার গ্রেফতারকৃত সাজুকে দু'দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। বিজি প্রেস ও পিএসসির ঊর্ধ্বতন ৬ কর্মকর্তা ছাড়াও রংপুর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের দু'জন জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
রংপুর পুলিশ সুপার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে সাংবাদিকদের জানান, বুধবার সকালে লালমনিরহাট থেকে গ্রেফতারকৃত আমজাদ হোসেন ও তার ভাই শিক্ষক আনিছুর রহমানকে গ্রেফতার করে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, লালমনিরহাট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজির সহকারী শিক্ষক মতিয়ার রহমান সাজু প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার বিকেলে ডিবি পুলিশ সাজুকে লালমনিরহাট থেকে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সাজু জানান, সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় তার ২১ প্রার্থী ছিল। এই ২১ প্রার্থীর কাছ থেকে তিনি প্রায় অর্ধকোটি টাকা নিয়েছেন। ওই টাকা থেকে তিনি শফিয়ার রহমানকে ২১ লাখ টাকা অগ্রিম দিয়েছেন। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে তিনি আরও জানান, প্রাইম ব্যাংক রংপুর শাখায় তার অ্যাকাউন্টে ৮ লাখ টাকা রয়েছে। গতকাল আদালত তার দু'দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
পুলিশ সুপার আরও জানান, বিজি প্রেসের কর্মচারী মোস্তফার অ্যাকাউন্টে আরও ২৩ লাখ টাকার সন্ধান মিলেছে।
পুলিশ সুপার জানান, প্রশ্নপত্র ফাঁস সিন্ডিকেটের সঙ্গে বিজি প্রেস ও পিএসসির ৬ কর্মকর্তা এবং রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সাবেক ছাত্রলীগ নেতা তারিক হাসান তুহিন ও ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মুরাদ হোসেনও জড়িত। তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।