Friday, 16 July 2010

সরকারি জমিতে ছাত্রলীগের নেতাদের পাকা ঘর

গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি | তারিখ: ১৭-০৭-২০১০

নাটোরের গুরুদাসপুর পৌর শহরের বিলচলন শহীদ শামসুজ্জোহা কলেজসংলগ্ন সরকারি জায়গা দখল করে পাকা ঘর নির্মাণ করছেন ছাত্রলীগের নেতারা। সেখানে তাঁরা শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদের নামে একটি সাইনবোর্ডও ঝুলিয়ে রেখেছেন।
গত ১৫ জুলাই সরেজমিনে দেখা গেছে, কলেজের সামনের রাস্তার পাশে স্টেডিয়ামের জন্য বরাদ্দ করা জায়গা দখল করে বেশ কয়েকটি আধাপাকা ঘর তোলা হয়েছে। তার পূর্বপাশে ১০ ফুট দীর্ঘ ও সাড়ে আট ফুট প্রস্থের একটি পাকা ঘরের নির্মাণকাজ চলছে। সেখানে শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদের সাইনবোর্ড ঝুলতে দেখা গেছে। স্থানীয় দোকানিরা জানান, ঘরটি ছাত্রলীগের বর্তমান ও সাবেক দুই সাধারণ সম্পাদক মিলে নির্মাণ করছেন।
গুরুদাসপুর পৌর ভূমি কার্যালয় সূত্র জানায়, জায়গাটি সরকারি। নিয়মনীতি উপেক্ষা করে ছাত্রলীগের নেতাসহ তাঁদের ছত্রছায়ায় থাকা অন্যরাও সরকারি জমি দখল করে ঘর তুলছেন। বিভিন্ন সময় পদক্ষেপ নিলেও নেতাদের দাপটের কারণে তা কার্যকর হয়নি।
গুরুদাসপুর উপজেলা সদরে গিয়ে কথা হয় ঘর নির্মাণকাজের সঙ্গে জড়িত আশরাফ শেখের সঙ্গে। তিনি নিজেকে ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমানে যুবলীগের নেতা দাবি করে প্রথম আলোকে বলেন, ‘শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদের জন্য ঘরটি নির্মাণ করা হচ্ছে। এ জন্য নাটোর-৪ আসনের (গুরুদাসপুর-বড়াইগ্রাম) সাংসদ আবদুল কুদ্দুস এক টন চাল বরাদ্দ দিয়েছেন। আর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জুমির মণ্ডল তাঁর ভাটা থেকে ইট দিয়ে সহায়তা করছেন।’ আশরাফ শেখ নিজেকে শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা ছাত্রলীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিমকে স্মৃতি সংসদের সভাপতি দাবি করেছেন।
আশরাফ শেখ আরও বলেন, ‘অনেকেই জায়গা দখল করে ঘর তুলে ব্যবসা করছে। সেখানে ছাত্রলীগের ছেলেরা শেখ রাসেলের স্মৃতি ধরে রাখতে (!) ঘর তুলছে। এতে ছাত্রলীগ আরও সংগঠিত হবে। তবে সরকার চাইলে যেকোনো সময় আমরা ঘর ভেঙে নিয়ে যেতে প্রস্তুত আছি।’
গুরুদাসপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম দাবি করেন, ‘এখন ছাত্রলীগের পদ থেকে অবসর নিতে হবে। বসার জায়গা করার জন্য একটি ঘর নির্মাণ করছি। সেখানে খেলাধুলা করে সময় কাটানো যাবে।’ এ ব্যাপারে লেখালেখি না করার জন্য তিনি এ প্রতিনিধিকে অনুরোধ জানান।
যোগাযোগ করা হলে গুরুদাসপুর পৌর ভূমি কার্যালয়ের এক তহশিলদার বলেন, ‘সরকারি জমি দখলের খবর পেয়ে গত ১৫ জুলাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সহায়তায় সেখানে নির্মাণকাজ বন্ধ করে দিয়েছি।’

http://www.prothom-alo.com/detail/date/2010-07-17/news/79241

No comments:

Post a Comment