Wednesday, 10 March 2010

কার্যাদেশের আগেই ঠিকাদার নির্বাচন, ১০ ভাগ অগ্রিমও!

কার্যাদেশের আগেই ঠিকাদার নির্বাচন, ১০ ভাগ অগ্রিমও!
Mzamin Thursday, 11 March 2010

দীন ইসলাম: দরপত্র খোলা হয়নি। সর্বনিম্ন দরদাতা নির্ণয় করে কার্যাদেশও দেয়া হয়নি। এর আগেই কাজের বিপরীতে শতকরা ১০ ভাগ অগ্রিম দেয়ার তোড়জোড় শুরু করেছে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়। এজন্য গত ৮ই মার্চ ব্যাংক গ্যারান্টির বিপরীতে অগ্রিম চেয়ে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির কাছে একটি সারসংক্ষেপ পাঠিয়েছে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়।
তাই প্রকল্প অনুমোদনের পর থেকে বাংলাদেশ রেলওয়ে ও মন্ত্রণালয়ের এমন অতিউৎসাহ নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। কারণ জিওবি অর্থায়নে বাসত্মবায়ন হচ্ছে এমন কোন প্রকল্পের বিপরীতে অগ্রিম দেয়ার নিয়ম নেই। সংশিস্নষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জিওবি অর্থায়নে বাংলাদেশ রেলওয়ের সৈয়দপুর-চিলাহাটি সেকশনের পুনর্বাসন প্রকল্পটি বর্তমান সরকারের আমলে গত ৭ই জানুয়ারি একনেক অনুমোদন করে। প্রায় ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ের এ প্রকল্পটি এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এই প্রকল্পের অধীনে রেলওয়ের বিভিন্ন সামগ্রী সরবরাহের জন্য গত ২৪শে জানুয়ারি দরপত্র আহবান করা হয়েছে। আগামী ১৫ই মার্চ দরপত্র খোলার কথা। এরপরই সর্বনিম্ন দরদাতা ঠিকাদার নির্বাচন করা হবে। যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সংশিস্নষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আনঅফিসিয়ালি ঠিকাদার নির্বাচন করে ফেলেছে মন্ত্রণালয়। তাদের সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরও রয়েছে বেশ সুসম্পর্ক। এজন্য বিশেষ দু’টি কোম্পানি কাজ পেতে যাচ্ছে এমন ভাবনায় নানা যুক্তি দাঁড় করিয়ে অগ্রিম চাওয়া হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এ বিভাগ থেকে ২০০৪ সালে জারি করা এক আদেশে বলা হয়েছে প্রকল্প সুষ্ঠুভাবে বাসত্মবায়নের স্বার্থে শুধুমাত্র বিদেশী সাহায্যপুষ্ট প্রকল্পে যথাযথ ব্যাংক গ্যারান্টি থাকলে শতকরা ১০ ভাগ ব্যাংক গ্যারান্টি দেয়া যাবে। তবে দেশীয় অর্থায়নে পরিচালিত/বাসত্মবায়নাধীন কোন প্রকল্পে ঠিকাদার/ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান/পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকে অগ্রিম না দেয়ার সিদ্ধানত্ম বহাল থাকবে। তাই কোনও মতেই বাংলাদেশ রেলওয়ের সৈয়দপুর-চিলাহাটি সেকশনের পুনর্বাসন প্রকল্পের বিপরীতে অগ্রিম অর্থ বরাদ্দ দেয়া যায় না। তবে সরকারি ক্রয় সংক্রানত্ম মন্ত্রিসভা কমিটির জন্য তৈরি করা সারসংড়্গেপে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিদ্ধানেত্মর সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে বলেছে, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ওই সিদ্ধানত্ম অনুযায়ী জিওবি অর্থায়নে প্রকল্প বাসত্মবায়নকালে ঠিকাদারের ব্যাংক গ্যারান্টির বিপরীতে অগ্রিম দেয়ার সুযোগ না থাকায় প্রকল্পের দরপত্রের উদ্ধৃত দরের উচ্চ হার এবং প্রকল্প কাজের মন্থর গতি দেখা যায়। ফলে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাসত্মবায়ন করা যায় না। অগ্রিম দিতে অতিউৎসাহী হয়ে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সারসংড়্গেপের দ্বিতীয় প্যারায় বলা হয়েছে, পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা, ২০০৮-এ ঠিকাদারকে অগ্রিম দেয়ার ড়্গেত্রে কোন নিষেধাজ্ঞা নেই। তবে সিপিটিইউ প্রকাশিত স্ট্যার্ন্ডাড ডকুমেন্ট ফর প্রকিউরমেন্ট অব ওয়ার্ক্স, পিডবিস্নউ-৩-এর জিসিসি-৭০.১ অনুযায়ী অগ্রিম দেয়ার বিধান নেই। তবে শতভাগ সরকারি অর্থায়নে বাসত্মবায়নাধীন প্রকল্পে সরকারের সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা না থাকলে অগ্রিম দেয়া যায় না।

ওদিকে সারসংড়্গেপের তৃতীয় প্যারায় রেলওয়ে যন্ত্রপাতির বিষয়ে নানা তথ্য দিয়ে বলা হয়েছে, রেল, রেলপথ নির্মাণ ও পুনর্বাসন কাজের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি বেশির ভাগই আমদানিযোগ্য পণ্য। প্রতিটি পুনর্বাসন কাজের শতকরা ৩০ থেকে ৫০ ভাগ মূল্য রেল কেনায় ব্যয় করা হয়। এছাড়া সিস্নপার, পয়েন্টস অ্যান্ড ক্রসিং, ইলাস্টিক রেল ক্লিপ, ফিস পেস্নট, ফিস বোল্ট আদেশ দিলে তৈরি করে দেয়া হয়। এসব কাজ করতে গিয়ে ঠিকাদারদের বড় অঙ্কের অর্থ বিনিয়োগ করতে হয়। তাই দরপত্রে অগ্রিম দেয়ার সংস্থান না থাকায় দরদাতা উচ্চ দর দেয়। ফলে প্রকল্প বাসত্মবায়নে ধীরগতি দেখা যায়। ক্রয় সংক্রানত্ম মন্ত্রিসভা কমিটির জন্য তৈরি করা সারসংড়্গেপ সূত্রে জানা গেছে, রেলওয়ে নিরাপদ ও ব্যয় সাশ্রয়ী স্থল পরিবহন বিধায় বাংলাদেশ রেলওয়ের সৈয়দপুর-চিলাহাটি সেকশন পুনর্বাসন শীর্ষক প্রকল্পটি একটি জনগুরম্নত্বসম্পন্ন প্রকল্প। এই প্রকল্পের প্রাক্কলিত মূল্য বিদেশী সাহায্যপুষ্ট প্রকল্পে ব্যাংক গ্যারান্টির বিপরীতে শতকরা ১০ ভাগ অগ্রিম দেয়া যায়। রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ব্যাংক গ্যারান্টির বিপরীতে অগ্রিম দেয়া ও এ সংক্রানত্ম শর্ত দরপত্র দলিলে যোগ করার অনুমোদন চেয়ে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। তাদের চিঠি পেয়েই বিদেশী সাহায্যপুষ্ট প্রকল্পের মতো জিওবি অর্থায়নে বাংলাদেশ রেলওয়ের সৈয়দপুর-চিলাহাটি প্রকল্পের অধীনে প্যাকেজ নং ডবিস্নউডিআই কাজের সুষ্ঠু বাসত্মবায়নের জন্য ব্যাংক গ্যারান্টির বিপরীতে শতকরা ১০ ভাগ অগ্রিম দেয়ার অনুমতি চেয়ে প্রসত্মাব পাঠানো হয়েছে।

http://www.mzamin.com/index.php?option=com_content&task=view&id=7792&Itemid=83

No comments:

Post a Comment