Saturday 27 March 2010

আবাসিক হলের কক্ষে ছাত্রলীগের কার্যালয়!



রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় আসাদুর রহমান, Kalerkantho ঢাকা, রবিবার, ১৪ চৈত্র ১৪১৬, ১১ রবিউস সানি ১৪৩১, ২৮ মার্চ ২০১০

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়কক্ষে ঢুকে দক্ষিণ দিকের দেয়ালে তাকালে চোখে পড়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি। এর নিচে লম্বা এক টেবিল। চারপাশে অনেক চেয়ার। টেবিলের ওপর কাগজপত্র। পশ্চিম দিকের দেয়াল ঘেঁষে বেঞ্চ। এটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখ্শ হলের ১০১ নম্বর কক্ষ, হল শাখা ছাত্রলীগের কার্যালয়। এখানেই চলছে সাংগঠনিক কার্যক্রম।
একই অবস্থা শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলেও। এ হলে ছাত্রলীগের কার্যালয় ১৬২ নম্বর কক্ষে। মাদার বখ্শ হলের মতো এখানেও সাঁটানো হয়েছে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি। সভা করার জন্য এখানে রয়েছে কনফারেন্স টেবিল। আছে বসার সুব্যবস্থা। হলের ছাত্ররা জানান, ১০-১২ দিন আগে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ওই কক্ষটিকে সংগঠনটির কার্যালয় বানায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ছাত্রলীগের এক কর্মী কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব হলেই আমাদের অফিস বানাতে চেয়েছি। কিন্তু মিডিয়াতে এলে হয়তো তা আর সম্ভব হবে না।'
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, ছাত্রলীগ এখন শিবিরের পথেই হাঁটতে শুরু করেছে। দলাদলি, মারামারি, চাঁদাবাজির পর এবার তারা শিক্ষার্থীদের আবাসিক হলে রাজনৈতিক কার্যালয় বানাতে শুরু করেছে। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী আবাসন সংকটে ভুগছে।
সাকের আল-মাহমুদ নামে এক শিক্ষার্থী কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমরা শিবিরমুক্ত ক্যাম্পাস চাই। কিন্তু ছাত্রলীগকে শিবিরের ভূমিকায় দেখতে চাই না।'
শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের আবাসিক ছাত্র ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি রেদোয়ান আহমেদ শুভ্র বলেন, 'আমি বিষয়টি জানতাম না। যদি ঘটনা সত্যি হয়, তবে এ ব্যাপারে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
মাদার বখ্শ হলের ছাত্রলীগ কর্মী কাজী শাহনেওয়াজ টোকন আবাসিক কক্ষে সংগঠনের কার্যালয় বানানোর বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, 'এটা আসলে দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাপার। বঙ্গবন্ধু বা প্রধানমন্ত্রীর ছবি যে কেউ লাগাতে পারে।'
রাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাজেদুল ইসলাম অপু বলেন, 'এগুলোকে ছাত্রলীগের কার্যালয় বলা যাবে না। এর পরও আমি এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব।'
মাদার বখ্শ হলের প্রাধ্যক্ষ বলেন, 'আমার হলে ছাত্রলীগ কর্মীরা একটি কুইজ প্রতিযোগিতা করার জন্য ওই রুমটা সাজিয়েছে। তারা সেখানে কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে না।'

No comments:

Post a Comment