Friday, 7 January 2011

জমিতে অবৈধ স্থাপনা, অফিসে ঘুষ : শিবচরে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ



শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি

মাদারীপুরের শিবচর অংশে পদ্মা সেতুর অধিগ্রহণকৃত এলাকায় গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের দাবি এবং ডিসি কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে ঘুষগ্রহণ ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে গতকাল বিকালে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করেন এলাকাবাসী। এক ঘণ্টার এ অবরোধে যোগাযোগ সচিবের গাড়িসহ দক্ষিণাঞ্চলের দুইশ’রও বেশি যানবাহন আটকে পড়ে। অবরোধকারীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের এলএ শাখার সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণ করার দাবি জানান। এর ব্যত্যয় হলে কঠোর আন্দোলনের হুমকি দেন তারা।
পদ্মা সেতু প্রকল্পের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত অবরোধকারীরা জানান, সম্প্র্রতি পদ্মা সেতুর বেড়িবাঁধের শিবচর অংশে ১২০ একর জমি অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত হওয়ার পর মাদবরচর ইউপি চেয়ারম্যান রাজ্জাক মোল্লা ও দানেশ মোল্লাসহ একটি চক্র অধিগৃহীত অংশে শত শত অবৈধ নতুন ঘরবাড়ি স্থাপন করে। এছাড়াও এরই মধ্যে অধিগ্রহণকৃত জমির ক্ষতিপূরণ দেয়ার সময় ক্ষতিগ্রস্তদের মাদারীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের এলএ শাখার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঘুষ দিতে হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। এসব অনিয়মের প্রতিবাদে গতকাল বিকাল ৫টায় উপজেলার মাদবরচর ইউনিয়নের দুই সহস্রাধিক মানুষ মহাসড়কের পাচ্চর স্ট্যান্ড এলাকায় অবরোধ করেন। এসময় সড়ক ও যোগাযোগ সচিব মো. মোজাম্মেল হক অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। স্থানীয় জনগণ আটকেপড়া সচিবের কাছে পদ্মা সেতু প্রকল্পের বিভিন্ন অনিয়মের বিষয় তুলে ধরেন। প্রায় এক ঘণ্টা পর শিবচর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মিজানুর রহমান ও হাইওয়ে সার্জেন্ট আসাদুজ্জামানের আশ্বাসের ভিত্তিতে স্থানীয়রা অবরোধ তুলে নেন। ক্ষতিগ্রস্তরা অভিযোগ করে বলেন, ‘ডিসি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ক্ষতিগ্রস্তদের চেকপ্রতি শতকরা ১০-১৫ ভাগ টাকা অগ্রিম ঘুষ নেয়। তাই আমরা জেলা প্রশাসকের অপসারণসহ সার্ভেয়ার ফিরোজ আহমেদ, মহিউদ্দিন, ট্রেচার আক্কাস মিয়া, অফিস সহকারী জসিমউদ্দিন, কানুনগো আবদুল জব্বার, চেইনম্যান মানিক সরদার, পিওন শাজাহান সরদারসহ দোষীদের অনতিবিলম্বে বদলি ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মিছিল ও অবরোধ করছি।’
ফজলু মুন্সী বলেন, পদ্মা সেতুতে আমরা সর্বস্ব হারিয়েছি। তারপরও আমরা সেতু চাই। কিন্তু ডিসি অফিসের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজশে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে একটি চক্র সরকারের কোটি কোটি টাকা লুটপাট করছে।
যোগাযোগ সচিব মো. মোজাম্মেল হক এসময় সাংবাদিকদের বলেন, বিষয়টি আমার মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন নয়। এরপরও আমি পদ্মা সেতু সংশ্লিষ্টদের জানাব।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপুল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, অধিগ্রহণকৃত এলাকায় অবৈধভাবে ঘরবাড়ি নির্মাণের বিষয়টি আমিও জেনেছি। এরই মধ্যে ওই এলাকায় সতর্কতামূলক সভা করা হয়েছে। তদন্তসাপেক্ষে কঠোর ব্যবস্থা নেব।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক শশী কুমার সিংহের মোবাইলে (০১৭২৬৬০৪২২২) বারবার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি

No comments:

Post a Comment