Thursday, 1 April 2010
চবিতে শতাধিক বৃক্ষের মৃত্যুদণ্ড!
চবির আলাওল হলের সামনে থেকে কিছু অপরিপকস্ফ গাছ কাটা হচ্ছে। হল ভবনের পাশ থেকেও কাটা হয়েছে প্রচুর ফলদ বৃক্ষ ।
সমকাল | শুত্রুবার | ২ এপ্রিল ২০১০ | ১৯ চৈত্র ১৪১৬ | ১৬ রবিউস সানি ১৪৩১
মনিরুল সোহাগ, চবি
হলের আবাসিক ভবনে আলো-বাতাস প্রবেশে নাকি বাধা দিয়েছিল গাছগুলো! আর এতেই তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর! চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গত দুই দিনে নির্দয়ভাবে আম-কাঁঠালসহ বিভিন্ন প্রজাতির ২০০ গাছ কেটে ফেলে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আলাওল হল ভবন এবং মাঠের পাশ থেকে এসব গাছ কাটা হয়।
প্রশাসন শতাধিক গাছ কাটার কথা স্বীকার করেছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, হলের পাশের অন্তত ২০টি ফলদ বৃক্ষ আম-কাঁঠালের প্রাণ সংহার করা হয়েছে। অথচ আমগাছজুড়ে এসেছিল মুকুল। কাঁঠালও ধরতে শুরু করেছিল। হলের ছাত্রদের মৌসুমি ফলের চাহিদা মেটাতে এই গাছগুলোই ছিল সম্বল। এছাড়া হলের মাঠের পাশ থেকে কাটা হয়েছে অপরিপকস্ফ বেশ কিছু গাছ। তবে হলের পাশ থেকে আরও কিছু অপরিপকস্ফ গাছও কাটা হয়েছে। গাছ কাটায় নিয়োজিতদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত দুই দিনে প্রায় ২০০ গাছ কেটেছে তারা। আরও কয়েকদিন গাছ কাটার কথা রয়েছে বলে জানা গেছে।
তবে প্রশাসন অবশ্য বলছে, শতাধিক গাছ বিক্রি করেছে তারা। নিয়মতান্ত্রিকভাবে এসব গাছ ১ লাখ ১৩ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়েছে বলে দাবি তাদের।
হলের পাশ থেকে এভাবে ফলদসহ অন্যান্য অপরিপকস্ফ গাছ কেটে ফেলার ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে উত্তেজিত হন হলের প্রভোস্ট এবং চবির লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক হোসাইন কবির। সমকাল প্রতিনিধিকে তিনি বলেন, 'গাছ কাটার দরকার ছিল, তাই কাটা হয়েছে। এর ভালো-মন্দ দেখার আপনি কে? বাংলাদেশের সব ভালো-মন্দ দেখার দায়িত্ব কি সাংবাদিকরা নিয়েছে? হলে আলো-বাতাস প্রবেশ করছে না, তাই এসব গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। সব নিয়ম মেনেই বিশ্ববিদ্যালয় গাছগুলো কেটেছে।'
জানা গেছে, গাছ কাটতে একটি কমিটিও গঠন করে চবি কর্তৃপক্ষ। এই কমিটি মিলে
কোন কোন গাছ কাটা হবে, তা নির্দিষ্ট করে দেয়। আম, কাঁঠাল এবং ইউক্যালিপটাসসহ ৬ প্রজাতির গাছ কাটা হয়েছে। কমিটির সদস্য ড. মোহাম্মদ শফিউল আলম সমকালকে জানান, 'হলের পাশ থেকে আম ও কাঁঠালের গাছ কাটা হয়েছে। এসব গাছ হলের ভবনের পাশেই ছিল। আবার কিছু কিছু গাছ দিয়ে হলে চোর ঢুকতে পারত। বাকি গাছের অনেকই এমনিতেই জন্মেছিল। তবে কিছু ছোট গাছও কাটা হয়েছে। এগুলো বিদেশি প্রজাতির ছিল।' তিনি আরও জানান, আগামী সপ্তাহে গাছ কাটার এই কার্যক্রম শেষ হবে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ইনস্টিটিউট অব ফরেস্ট্রি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেসের পরিচালক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আল আমীন সমকালকে জানান, 'মারা না গেলে বা অধিক ঝুঁকিপূর্ণ না হলে সাধারণত কোনো গাছ কাটা ঠিক নয়। আলাওল হলের পাশের গাছগুলো ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার কথা নয়। গাছগুলো কেন কাটা হয়েছে, তা আমি জানি না।
চবির প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন সমকালকে জানান, যেসব গাছ বেশি ছায়া দিত, সেগুলো কেটে ফেলা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিয়মতান্ত্রিকভাবে সেগুলো বিক্রি করেছে।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment