ডেস্ক রিপোর্ট
নড়াইলের লোহাগড়ায় আওয়ামী লীগ নেতার গুদাম থেকে ১০২ বস্তা খাদ্য অধিদফতরের গম আটক করেছে উপজেলা প্রশাসন। চট্টগ্রামে ওএমএসের চাল কালোবাজারে বিক্রির দায়ে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার ডিলারশিপ বাতিল করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। এদিকে মানিকগঞ্জের শিবালয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে আটক করা ওএমএসের চাল জিআর’র চাল বলে চালিয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল এসব ঘটনা ঘটে। বিস্তারিত প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর :
নড়াইল : লোহাগড়া উপজেলার নলদী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা মিঠু মোল্যার গুদাম থেকে খাদ্য অধিদফতরের ১০২ বস্তা গম আটক করেছে উপজেলা প্রশাসন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অরুণ কুমার মণ্ডলের নেতৃত্বে মিঠাপুর বাজারে অভিযান চালিয়ে এ গম আটক করা হয়।
জব্দ করা গম স্থানীয় ব্যবসায়ী সফিয়ারের জিম্মায় নিয়ে গমসহ গুদামটি সিল করে দেয়া হয়েছে। লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অরুণ কুমার মণ্ডল জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে মিঠু মোল্যার ভাড়া করা গুদাম থেকে কালোবাজারের জন্য মজুত করা খাদ্য অধিদফতরের ১০২ বস্তা গম আটক করা হয়েছে। এর প্রতি বস্তায় ৫০ কেজি করে গম আছে। এ বিষয়ে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
চট্টগ্রাম : সরকারি ওএমএসের চাল গোপনে অন্যত্র বিক্রির অপরাধে এক আওয়ামী লীগ নেতার ডিলারশিপ বাতিল ও ৩৬ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বুধবার বোয়ালখালী উপজেলায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, বোয়ালখালী উপজেলার পশ্চিম গোমদণ্ডী বানুরটেক এলাকার ওএমএস ডিলার স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মো. সেলিম বিভিন্ন সময় সরকারি বরাদ্দ ওএমএস চাল গোপনে অন্যত্র বিক্রি করে আসছিল। বিভিন্ন সময় এ ব্যাপারে তাকে হুশিয়ার করা সত্ত্বেও সে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে স্থানীয় লোকজনকে ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছিল। ফলে এলাকার লোকজন ভয়ে বিষয়টি কাউকে জানায়নি।
এদিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিলশাদ বেগম বানুরটেক এলাকায় গিয়ে ওএমএস ডিলার মো. সেলিমের দোকানে চালের গরমিল পান। এ ঘটনায় তাত্ক্ষণিকভাবে তার ডিলারশিপ বাতিল করে ৩৬ হাজার টাকা জরিমানা করেন। ইউএনও জানান, স্টক মতে তার কাছে গতকাল সকাল পর্যন্ত ৪০ বস্তা চাল থাকার কথা। কিন্তু স্টক মিলিয়ে মাত্র ২৪ বস্তা পাওয়া গেছে। এতে প্রায় ৮০০ কেজি চাল কম পাওয়া যায়।
শিবালয় (মানিকগঞ্জ) : শিবালয় থানা পুলিশ উপজেলার জাফরগঞ্জ বাজারের একটি দোকান থেকে বুধবার সন্ধ্যায় ৩০ বস্তা ওএমএসের সিজ করা চাল গোপন সমঝোতার মাধ্যমে জিআরের চাল বানানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ চাল নিয়ে শিবালয় থানা পুলিশ ও সরকারি খাদ্য গুদাম কর্মকর্তার পরস্পরবিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে।
শিবালয় থানার এএসআই মনিরুজ্জামান জানান, চাল ব্যবসায়ী মো. আবদুল আওয়াল ওএমএসের চাল বিক্রি করছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে তার দোকানে তল্লাশি চালালে ৩০ বস্তা সিদ্ধ চাল পাওয়া যায়। তখন ওই ব্যবসায়ী চালের কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। তাই ওই চাল সিজ করে পুলিশের জিম্মায় রাখা হয়। পরদিন সকাল ১০টার মধ্যে চালের যাবতীয় কাগজপত্র দেখানোর সময় বেঁধে দেয় হয়।
চাল ব্যবসায়ী মো. আবদুল আওয়াল জানান, উথুলী গ্রামের জনৈক ফারুক দৌলতপুর উপজেলার কোলা গ্রামের পূর্বপাড়া জামে মসজিদের সভাপতি লুত্ফর রহমানের কাছ থেকে ২ টন জিআরের চাল কিনেন। তারা গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর গোডাউন থেকে চালের চালান বের করেন।
এদিকে দৌলতপুর খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দ আহমেদ জানান, গত ৩ মাসের মধ্যে ওই গোডাউন থেকে কোনো জিআরের চালের চালান বের হয়নি, শুধু ওএমএসের চালের চালান বের হয়েছে। আর যে তারিখে ওই সিজ করা চালের চালানের কাগজ দেখানো হয়েছে, সে সময় জিআরের জন্য আতপ চাল বরাদ্দ ছিল, কোনো সিদ্ধ চাল বরাদ্দ ছিল না বলে জানান তিনি।
No comments:
Post a Comment