Tuesday 31 May 2011

সরকারের সঙ্গে ব্যবসা : বিদ্যুত্ এক মন্ত্রীর রাস্তা সেতু অন্যজনের












এম আবদুল্লাহ
বর্তমান সরকারের দুই প্রভাবশালী মন্ত্রী নিজেদের পারিবারিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সরকারের সঙ্গে ব্যবসা করছেন। বিদ্যুত্ খাতের প্রকল্পে একচ্ছত্র আধিপত্য এক মন্ত্রীর প্রতিষ্ঠানের আর দেশের যোগাযোগ খাত তথা সড়ক, সেতু ও এক্সপ্রেসওয়ের কাজ আরেক মন্ত্রীর প্রতিষ্ঠানের দখলে। দুই মন্ত্রীর পারিবারিক প্রতিষ্ঠান বর্তমান সরকারের আমলে ২২শ’ মেগাওয়াট ক্ষমতার ১১টি বিদ্যুত্ কেন্দ্রের কাজ পেয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, বর্তমান সরকারের সময়ে গৃহীত বড় বড় প্রকল্পের কাজ বাগিয়ে নিতে ওই দুই মন্ত্রী তাদের প্রভাব কাজে লাগাচ্ছেন। দু’জনই ঠিকাদার থেকে মন্ত্রী হওয়ায় তাদের প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠানগুলো দরপত্রে অংশগ্রহণ করতে প্রতিকূল পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছে। অনেক যোগ্য প্রতিষ্ঠানও মন্ত্রীর পারিবারিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দরপত্র দাখিল করতে সাহসই পাচ্ছে না।
মন্ত্রী হওয়ার পর দৃশ্যত কোম্পানির পদ ছাড়লেও অনুসন্ধানে জানা গেছে, মন্ত্রিত্বের পাশাপাশি এখনও ব্যবসা দেখভাল করছেন তারা। আর সরাসরি কোম্পানিতে দায়িত্ব পালন করছেন তাদের স্ত্রী, কন্যা, ভাইসহ পরিবারের সদস্যরা। অবশ্য অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান ও যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন। পরিবারিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তাদের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই বলেও দাবি করেছেন তারা।
অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচ্য দুই মন্ত্রীর পারিবারিক প্রতিষ্ঠান বর্তমান সরকারের সময়ে ২ হাজার ২শ’ মেগাওয়াটের বেশি ক্ষমতার বিদ্যুত্ কেন্দ্র স্থাপনের কাজ করায়ত্ত করেছে। এর মধ্যে বাণিজ্যমন্ত্রীর পারিবারিক প্রতিষ্ঠান পেয়েছে প্রায় ১ হাজার ৭শ’ মেগাওয়াট ক্ষমতার এবং যোগাযোগমন্ত্রীর স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান পেয়েছে ৫শ’ মেগাওয়াটের অধিক ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুত্ কেন্দ্রের কাজ। সূত্রমতে, বর্তমান সরকারের আমলে ৩টি বিদ্যুত্ কেন্দ্রের কাজ পেয়েছে যোগাযোগমন্ত্রীর প্রতিষ্ঠান। এ কাজ পাওয়ার ক্ষেত্রেও প্রচ্ছন্ন প্রভাব কাজ করেছে বলে পিডিবি সূত্র জানিয়েছে। চাঁদপুর ১৫০ মেগাওয়াট, সিলেট ১৫০ মেগাওয়াট ও ঘোড়াশাল ২১০ মেগাওয়াট বিদ্যুত্ কেন্দ্রের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যোগাযোগমন্ত্রীর প্রতিষ্ঠান জড়িত।
সদ্য ভিত্তি স্থাপনকৃত রাজধানীর এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ কাজ পাওয়া প্রতিষ্ঠান ইটাল-থাই’র বাংলাদেশী এজেন্ট এখন কে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। দেশের অন্যতম প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী গ্রুপ শিকদার গ্রুপের পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে যে, ইটাল-থাই’র বাংলাদেশী এজেন্ট যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের কোম্পানি। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের দরপত্রে অংশগ্রহণকারী শিকদার-কেসিসি জেভির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, অস্বচ্ছতার মাধ্যমে কারিগরিভাবে তাদের অযোগ্য দেখানো হয়েছে। কারিগরি প্রস্তাব পুনরায় মূল্যায়নের দাবি উপেক্ষা করে প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকার কাজটি দেয়া হয়। প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে মূল্যায়ন করার দাবিও আমলে নেয়া হয়নি। এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ কাজ ইটাল-থাইকে দেয়ার কারণে দেশের কয়েক হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
অভিযোগ মূল্যায়ন কমিটির বেশিরভাগ সদস্যই যোগাযোগমন্ত্রীর অধীনস্থ হওয়ায় যোগ্য প্রতিষ্ঠান অবিচারের শিকার হয়েছে। টেন্ডার প্রক্রিয়া চলাকালে প্রকল্প পরিচালক যুগ্ম-সচিব মো. আব্দুল কাদিরকে সরিয়ে এমএ ওয়াদুদকে বসানো নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। দরপত্র মূল্যায়নে বড় ধরনের কারসাজি হয়েছে বলে দাবি করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরও অভিযোগ করা হয়, গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর মন্ত্রী সিঙ্গাপুর হয়ে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার পথে ব্যাংককের নভোটেল-লোটাস হোটেলে ইটাল-থাই’র সঙ্গে বৈঠক করেন। এরপর ইটাল-থাই বাংলাদেশে মফিজ আহমেদ ভূঁইয়ার এজেন্সি বাতিল করে। ইটাল-থাই স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের গুলশান শাখা থেকে স্থানীয় উেসর বিড বন্ড দিয়েছে। এতেও বিদেশি এ কোম্পানির সঙ্গে স্থানীয় প্রভাবশালীদের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ রয়েছে বলে জানানো হয়। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন যোগাযোগমন্ত্রী। তিনি বলেন, তার কাজে অস্বচ্ছতা নেই। আর ইটাল-থাই’র সঙ্গে তিনি যুক্তও নন।
যমুনা সেতুর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সিআরবিসি নামের কালো তালিকাভুক্ত একটি কোম্পানিকে কাজ দিতে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন। কিন্তু তার এই ইচ্ছায় বাদ সাধে মিডিয়া। ব্যাপক লেখালেখির পর সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি কালো তালিকাভুক্ত কোম্পানিকে কাজ দেয়ার প্রস্তাবের সমালোচনা করে প্রথম দফায় তা বাতিল করে দেয়। পুনঃদরপত্রে যে কোম্পানিটিকে ৭৭ কোটি টাকা বেশি দরে কাজ দেয়া হয়েছে সেটিরও স্থানীয় প্রতিনিধিত্বে মন্ত্রীর প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। যদিও যোগাযোগমন্ত্রী দাবি করেছেন যে, নতুন করে কাজ পাওয়া প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তার প্রতিষ্ঠান সাকোর কোনো সম্পর্ক নেই।
যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসন জানান, মন্ত্রী হওয়ার পর তিনি ‘সৈয়দ আবুল হোসেন কোম্পানি’ সাকো (ঝঅঐঈঙ) থেকে পদত্যাগ করেছেন। কোম্পানির সঙ্গে তার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। মন্ত্রীর নিজের নামের কোম্পানি এবং স্ত্রী ও কন্যারা সেই কোম্পানির কর্পোরেট পরিচালক থাকা সত্ত্বেও সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করা কতটা যুুক্তিযুক্ত জানতে চাইলে যোগাযোগমন্ত্রী ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেন, তাতে কী হয়েছে? ওরা পরিচালক, ওরাতো সরকারের সঙ্গে ব্যবসা করতেই পারে। তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ বানোয়াট এবং যারা অভিযোগ করে তারা বাটপাড়—লিখে দেবেন।
উল্লেখ্য, সৈয়দ আবুল হোসেন মন্ত্রী হওয়ার কয়েক মাস পর সাকোর বোর্ড অব ডাইরেক্টরস-এর চেয়ারম্যান হিসেবে নূরুল হক এফসিএ এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে মোস্তফা ফারুক মোহাম্মদকে দায়িত্ব দেয়া হয়। বোর্ডের কর্পোরেট ডাইরেক্টর হিসেবে আছেন মন্ত্রীপত্নী খাজা নার্গিস হোসেন এবং দুই কন্যা সৈয়দা রুবাইয়্যাত হোসেন ও সৈয়দা ইফফাত হোসেন।
সামিটের একাধিপত্য : এদিকে বর্তমান সরকার আমলের তিনটি বৃহত্ বিদ্যুত্ কেন্দ্রসহ মোট ৮টি বিদ্যুত্ কেন্দ্র স্থাপনের কাজ পেয়েছে সামিট। বিবিয়ানা-১, বিবিয়ানা-২ এবং মেঘনাঘাট-২— এ ৩টি বিদ্যুত্ কেন্দ্রের প্রতিটির উত্পাদন ক্ষমতা ৩৩০ থেকে ৪৫০ মেগাওয়াট। তিনটির কাজই পেয়েছে সামিট ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড মার্কেন্টাইল করপোরেশন লিমিটেড। সঙ্গে নামকাওয়াস্তে রাখা হয়েছে মার্কিন কোম্পানি জিই এনার্জিকে। আইপিপি (ইন্ডিপেন্ডেন্ট পাওয়ার প্রোডিউসার) নীতিমালা অনুযায়ী স্থাপিতব্য এই তিনটি কেন্দ্রের ক্ষেত্রেই সামিটের অংশীদারিত্ব ৮০ শতাংশ। আর আমেরিকান কোম্পানি জিই এনার্জি এলএলসির ২০ শতাংশ। সরকার ২২ বছর ধরে এই কেন্দ্রগুলো থেকে বিদ্যুত্ কিনবে। এই তিনটি বিদ্যুত্ কেন্দ্র স্থাপনে ব্যয় হবে প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা। গত বৃহস্পতিবার বিদ্যুত্ কেন্দ্র তিনটির জন্য পিডিবি’র সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করে প্রতিষ্ঠানটি।
মহাজোট সরকার দায়িত্ব নেয়ার এক বছর পর বিনা দরপত্রে কুইক রেন্টাল বিদ্যুত্ কেন্দ্র স্থাপনের হিড়িক পড়লে সামিট গ্রুপ নারায়ণগঞ্জের মদনগঞ্জে বিদ্যুত্ কেন্দ্র স্থাপনের কাজে অযোগ্য ঘোষিত হয়। তারপরও পিডিবিকে দিয়ে তাদের প্রস্তাবের বৈধতা দিতে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত নেয়া হয়। পরে সামিট মদনগঞ্জে ১০২ মেগাওয়াট ‘কুইক রেন্টাল’-এর কাজ পেয়েছে। খুলনা পাওয়ার কেম্পানির ১১৫ মেগাওয়াট ও নোয়াপাড়ায় খানজাহান আলী পাওয়ারের ৪০ মেগাওয়াট ‘কুইক রেন্টাল’ও সামিটের। এছাড়াও সামিট ফার্নেস অয়েলে চালিত সৈয়দপুর ১০৪ ও শান্তাহার ৫২ মেগাওয়াট আইপিপির কাজ পেয়েছে।
সামিট গ্রুপ এর আগে মোট ৩২৬ মেগাওয়াট বিদ্যুত্ উত্পাদন করছিল। এর মধ্যে পল্লী বিদ্যুত্ সমিতির আশুলিয়া পাওয়ার প্লান্টে ৪৫ মেগাওয়াট, নরসিংদী পাওয়ার প্লান্টে ৩৫ মেগাওয়াট, কুমিল্লা পাওয়ার প্লান্টে ২৫ মেগাওয়াট, উল্লাপাড়ায় ১১ মেগাওয়াট, সামিট পূর্বাঞ্চল পাওয়ার কোম্পানির আওতায় কুমিল্লার জাঙ্গালিয়ায় ৩৩ মেগাওয়াট এবং রূপগঞ্জে ৩৩ মেগাওয়াট বিদ্যুত্ উত্পাদন হচ্ছে। সামিট গ্রুপের অন্যতম প্রতিষ্ঠান খুলনা পাওয়ার কোম্পানি লি. (কেপিসিএল) খুলনায় বার্জ মাউন্টেড বিদ্যুত্ কেন্দ্র স্থাপন করে ১৪৪ মেগাওয়াট বিদ্যুত্ উত্পাদন করছে।
অভিযোগ রয়েছে, বৃহত্ বিদ্যুত্ কেন্দ্র স্থাপনের অভিজ্ঞতা না থাকলেও বিনিয়ানা বিদ্যুত্ কেন্দ্রের ক্ষেত্রে সামিট-জিই এনার্জি ক্ষমতার জোরে প্রাকযোগ্যতা অর্জন করে। পরে দাতা সংস্থার পরীক্ষা-নিরীক্ষায় প্রয়োজনীয় যোগ্যতা না থাকার বিষয়টি প্রমাণিত হয়। নতুন করে বিবিয়ানা ৩৩০-৪৫০ মেগাওয়াট গ্যাসভিত্তিক কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুত্ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য প্রাকযোগ্যতার প্রস্তাব আহ্বান করা হলে ২০০৯ সালের ৮ এপ্রিল ৭টি দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠান তাদের যোগ্যতার দলিলপত্র জমা দেয়। এর মধ্যে ৪টি প্রতিষ্ঠানকে প্রাকযোগ্য বিবেচনা করা হলেও ৩টি প্রতিষ্ঠান দরপত্র দলিল (আরএফপি-রিকোয়েস্ট ফর প্রপোজাল) কেনে। গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর মাত্র ২টি প্রতিষ্ঠান প্রস্তাব দাখিল করে। মূল্যায়নে পরিকল্পিতভাবে মালয়েশিয়ার ওয়াইটিএল পাওয়ার ইন্টারন্যাশনাল বারহাডকে নন-রেসপনসিভ ঘোষণা করা হয়। সামিট-জিই জেভিকে বিবিয়ানা বিদ্যুত্ কেন্দ্রের একমাত্র বৈধ প্রস্তাবদাতা করার পরিকল্পনা থেকেই এটা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। কারণ, প্রধান উদ্যোক্তা (লিড স্পন্সর) হিসেবে সামিটের এ ধরনের বৃহত্ কেন্দ্র স্থাপনের পূর্বঅভিজ্ঞতাই নেই।
বিবিয়ানা ৩৩০-৪৫০ মেগাওয়াট গ্যাসভিত্তিক কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুত্ কেন্দ্রের (দ্বিতীয় পর্যায়) জন্য গত বছরের ২ মে ১২টি দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠান প্রাকযোগ্যতার দলিলপত্র দাখিল করে। ৮টি প্রতিষ্ঠান প্রাকযোগ্য প্রতিষ্ঠানের ৫টি দরপত্র দলিল (আরএফপি) কিনলেও ১৪ অক্টোবর মাত্র ৩টি দরপত্র জমা হয়। নানা কারসাজি ও ছলচাতুরীর মাধ্যমে এ কেন্দ্রের কাজও সামিটকে দেয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
প্রচলিত নিয়মে বড় বিদ্যুত্ কেন্দ্রের ট্যারিফ ছোট বিদ্যুত্ কেন্দ্রের তুলনায় কম হয়। কম্বাইন্ড সাইকেলে ট্যারিফ কম হয়। এছাড়া বিদ্যুত্ ক্রয় চুক্তির মেয়াদ যত বেশি হবে দর তত কম হবে। কিন্তু সামিটের ক্ষেত্রে ঘটেছে উল্টো। ১৫ বছর মেয়াদি জামালপুর ডুয়েল-ফুয়েল বিদ্যুত্ কেন্দ্রের মুতিয়ারা-পাওয়ারপ্যাক জেভির চেয়ে সামিটের ২২ বছর মেয়াদি বিবিয়ানা-১ ও ২ এবং মেঘনাঘাট-২ কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুত্ কেন্দ্রের ট্যারিফ বেশি। বেশিসংখ্যক উদ্যোক্তার অংশগ্রহণে জামালপুরে প্রতিযোগিতামূলক দর পাওয়া গেছে। কিন্তু বিবিয়ানা-১ ও ২ এবং মেঘনাঘাট-২ বিদ্যুত্ কেন্দ্রে সামিটের তেমন কোনো প্রতিযোগী রাখা হয়নি।
বাণিজ্যমন্ত্রী কর্নেল (অব.) ফারুক খান সামিট গ্রুপে তার কোনো ডাইরেক্টরশিপ নেই দাবি করে বলেন, আমার কোনো ব্যবসা নেই, আমি শুধুই রাজনীতিক। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমি মন্ত্রী হয়েছি বলে কি আমার ভাইয়েরা ব্যবসা করতে পারবে না? বিশ্ববিখ্যাত মা-বাবার সন্তান হিসেবে তারা সব ভাই এখনও একসঙ্গে আছেন এবং একান্নবর্তী পরিবার হিসেবে গর্ব করেন বলেও জানান তিনি। এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী সামিটের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কথা অস্বীকার করলেও একই সঙ্গে বার বার সামিট গ্রুপকে ‘আমাদের কোম্পানি’ উল্লেখ করে সরকারের সঙ্গে ব্যবসা ও একের পর এক বিদ্যুত্ কেন্দ্রের কাজ পাওয়ার যৌক্তিকতা তুলে ধরেন। তিনি দাবি করেন, সামিট কাজ পেয়েছে যোগ্যতাবলে। বৃহত্ বিদ্যুত্ কেন্দ্রের অভিজ্ঞতা না থাকা সত্ত্বেও শর্ত শিথিল করে সামিটকে কাজ দেয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, কাজ না পেলে অভিজ্ঞতা হবে কিভাবে। সাংবাদিকদের কারণে দেশি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ করতে পারে না, দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হয়।

No comments:

Post a Comment