Tuesday, 31 May 2011

শেয়ার কেলেঙ্কারিতে জড়িতদের আড়ালের চেষ্টা করছে সরকার : এরশাদ

স্টাফ রিপোর্টার

ক্ষমতাসীন মহাজোটের অন্যতম শরিক জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, সরকার শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারিতে জড়িতদের আড়াল করার চেষ্টা করছে। শেয়ারবাজার নিয়ে তদন্ত কমিটির রিপোর্ট প্রথমে প্রকাশ করার কথা বলার পরও এই রিপোর্ট প্রকাশে অহেতুক কালক্ষেপণ করা হয়েছে। জনগণের চাপের মুখে রিপোর্টটি প্রকাশ করে এখন বলা হচ্ছে, এটি অপূর্ণাঙ্গ। তাই নতুন করে তদন্ত হবে। তিনি বলেন, শেয়ারবাজার নিয়ে এসব করার পরিণাম শুভ হবে না। শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করে ক্ষতিগ্রস্ত ১ কোটি ভোটার আগামীতে আর মহাজোটকে ভোট দেবে না। গত রোববার রাজধানীর মুক্তাঙ্গনে মহান মে দিবস উপলক্ষে জাতীয় শ্রমিক পার্টি আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এইচ এম এরশাদ বলেন, দেশের পরিস্থিতি ভালো নয়। মানুষ নাজুক পরিস্থিতির মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের সীমাহীন ঊর্ধ্বগতিতে সবাই দিশেহারা। প্রতিটি জিনিসের দাম শতকরা ১৭ ভাগ বেড়েছে। এখনও সময় আছে, দ্রব্যমূল্যের লাগাম টেনে ধরতে না পারলে সরকারের ভিত নড়ে যাবে। দ্রব্যমূল্যের সীমাহীন এই ঊর্ধ্বগতির মধ্যে মানুষ যাতে দু’বেলা ভালোভাবে খেয়ে-পরে বাঁচতে পারে সেজন্য বেতন-ভাতা বাড়াতে হবে। মজুরি কমিশন গঠন করতে হবে। শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি পুনঃনির্ধারণ করতে হবে।
তিনি মহাজোটের শরিক দল হিসেবে জাতীয় পার্টির মূল্যায়ন এবং নিজের মামলা প্রত্যাহার সম্পর্কে বলেন, সরকার যদি জাতীয় পার্টিকে তাদের একাংশ মনে করে তাহলে অবশ্যই তারা আমাদের মূল্যায়ন করবে। মামলাও প্রত্যাহার করবে। সরকারের উদ্দেশ্যে হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, আমাকে মামলার ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। দেশের ও দলের স্বার্থে প্রয়োজনে যে কোনো সময় আমি জেলে যেতে প্রস্তুত। আমার আর চাওয়া পাওয়ার কিছু নেই—জাতীয় পার্টির মাঝে আমি বেঁচে থাকতে চাই।
সংবিধান সংশোধন করে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তনের দাবি জানিয়ে এরশাদ বলেন, মানুষ এখনও জাতীয় পার্টির শাসনামলের কথা মনে রেখেছে। গত বিশ বছরে তারা একাধিক সরকার দেখেছে। কেউ জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি। তাই আবার মানুষ দেশে রাষ্ট্রপতিশাসিত সরকার দেখতে চায়।
নারীনীতি নিয়ে বিভ্রান্তি দূর করার আহ্বান জানিয়ে সাবেক প্রেসিডেন্ট বলেন, সরকার বলছে কোরআন-সুন্নাহ বিরোধী কোনো আইন করবে না। এসব না বলে সরকার পরিষ্কার করে বলে দিলেই পারে যে নারীনীতিতে কোরআন অনুযায়ী সম্পদের মালিকানার বিষয়টি ফয়সালা করা হবে। সরকার এসব না করে উল্টো পথে হাঁটছে। নানা ধরনের টালবাহানা করছে। মুক্তাঙ্গনে মিছিল-সমাবেশে বাধা দিচ্ছে। ১৪৪ ধারা জারি করছে। এসব করে লাভ হবে না। মুক্তাঙ্গন মুক্ত জায়গা। মুক্তাঙ্গন বন্ধ করে দিলে অধিকার আদায়ে জনগণের কথা বলার তো আর কোনো জায়গা থাকবে না।
সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন দলের সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর আহমেদ এবং মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার। সভাপতিত্ব করেন শ্রমিক পার্টির সভানেত্রী আনোয়ারা বেগম।

No comments:

Post a Comment