Wednesday, 29 June 2011

শীতলক্ষ্যা নদীর মাটি কেটে বিক্রি করছেন প্রভাবশালীরা










সিদ্ধিরগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
সিদ্ধিরগঞ্জে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী কয়েকজন নেতা ও বিআইডব্লিউটিএ’র এক কর্মকর্তা শীতলক্ষ্যা নদীর তীরের মাটি কেটে বিক্রি করে দিচ্ছেন। কয়েকদিন ধরে তারা সিদ্ধিরগঞ্জের আটি মৌজার সোহরাব অয়েল মিল ও মনোয়ারা জুট মিলের পাশে, সাইলো এবং আদমজী ইপিজেডের পেছনে শীতলক্ষ্যা নদীর তীরের মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছেন। এ ঘটনায় হতবাক হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী। এলাকাবাসী জানায়, মাটিগুলো বিক্রি করা হচ্ছে ইটভাটায়।এদিকে বিআইডব্লিউটিএ’র ঊর্ধ্বতন উপ-পরিচালক সাইফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত একটি চিঠি সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বরাবর দেয়া হয়। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, জনৈক শাহজাহান প্রধান বাদল ওরফে শাহজালাল বাদল, নুরুজ্জামান জজ, ডা. শহীদুল্লাহ, জাহাঙ্গীর হোসেন, এম এইচ মনির, খোকন দেবনাথ ও বাসেদ মিয়া আটি মৌজা দখল করে বালুর ব্যবসা করে আসছেন। চিঠিতে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু আটি মৌজায় সরেজমিন গিয়ে কোনো ধরনের বালু ব্যবসার অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। উপরন্তু আটি মৌজায় শীতলক্ষ্যা নদীর তীরের মাটি কেটে অন্যত্র বিক্রি করে দিচ্ছেন প্রভাবশালীরা। একইভাবে সাইলো গোডাউন ও আদমজী ইপিজেডের পূর্বপাশের মাটি কেটে ট্রলার দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে একই প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। সরেজমিন আটি এলাকায় গিয়ে ট্রাক ও ট্রলারে মাটি কেটে নিতে দেখা গেছে। মাটি কাটায় নিযুক্ত লেবার এবং প্রভাবশালীদের নিযুক্ত বিপ্লব নামের এক যুবক জানায়, বিআইডব্লিউটিএ’র কর্মকর্তা আলমগীর কবির, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইয়াসিন মিয়া ও প্রচার সম্পাদক তাজিম বাবু এই মাটি কাটাচ্ছেন। প্রতি ট্রাক মাটি দেড় হাজার টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। গত ক’দিন ধরে মাটি কাটার ফলে বড় ধরনের ডোবার সৃষ্টি হয়েছে শীতলক্ষ্যা নদীর ওই অংশে। এদিকে বিআইডব্লিউটিএ’র চিঠিতে যে ৭ জনের নাম উল্লেখ করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় অভিযোগ দেয়া হয়েছে, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, বিআইডব্লিউটিএ’র উপ-পরিচালক (বন্দর) আলমগীর কবির আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে অংশীদারিভিত্তিতে শীতলক্ষ্যার মাটি কেটে অন্যত্র বিক্রি করার প্রস্তাব দেন। কিন্তু শীতলক্ষ্যা নদীর মাটি কেটে অন্যত্র বিক্রি করে দেয়ার অবৈধ প্রস্তাব আমরা প্রত্যাখ্যান করায় আলমগীর তার অফিসার সাইফুল ইসলামকে দিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, কোনো সত্যতা পাওয়া না যাওয়ায় ওই মামলা রেকর্ডভুক্ত হয়নি। শীতলক্ষ্যা নদীর মাটি কেটে অন্যত্র বিক্রি করে দেয়ার ব্যাপারে আলাপ করলে বিআইডব্লিউটিএ’র উপ-পরিচালক (বন্দর) আলমগীর কবির জানান, আমি ইঞ্জিনিয়ার পাঠিয়ে মাটি কাটার ব্যাপারে তদন্ত করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর প্রতিবেদন দাখিল করে ব্যবস্থা নেব। অপরদিকে এলাকাবাসী জানায়, অপরিকল্পিতভাবে শীতলক্ষ্যার তীরের মাটি কাটায় ছোট-বড় ডোবা সৃষ্টি হলে বর্ষা মৌসুমে শীতলক্ষ্যার তীর ভেঙে আস্তে আস্তে মাটিগুলো শীতলক্ষ্যা নদীর মাঝপথে গিয়ে পড়বে। এতে শীতলক্ষ্যা নদীর গতিপথ পরিবর্তন হতে পারে। এমনকি নৌযানগুলো চলতে গিয়ে বাধার সৃষ্টি হতে পারে। প্রভাবশালীদের নিযুক্ত যুবক বিপ্লবের কাছে মাটি কাটার অনুমতি রয়েছে কি-না জানতে চাইলে সে জানায়, লিখিত কোনো অনুমতি নেই। তবে মাটি কাটার জন্য ডিসি অফিস থেকে মৌখিক অনুমতি নেয়া হয়েছে। সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইয়াসিন মিয়া নিজের জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেন

No comments:

Post a Comment