Wednesday 23 February 2011

হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে রামপুরায় জমি-বাড়ি দখল করে নিয়েছে আ’লীগ সন্ত্রাসীরা


স্টাফ রিপোর্টার

হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে রাজধানীর পশ্চিম রামপুরার বাগিচারটেক এলাকায় ৪০ কাঠা জমিসহ বাড়ি দখল করে নিয়েছে আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীরা। তারা সশস্ত্র মাস্তানদের উপস্থিতিতে ওই জায়গায় নতুন স্থাপনা নির্মাণ করছে। সন্ত্রাসীদের হামলার ভয়ে ৪৫ বছর ধরে ভোগদখলকৃত মালিকরা জমির কাছে যেতে পারছেন না। এমনকি প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, রামপুরা থানার পশ্চিম উলুনস্থিত মৌজার ১৯৮ ও ২০০ দাগের সিটি জরিপ ৫০৩৩ দাগের ৪০ কাঠা অর্থাত্ ৬৬ শতাংশ জমি দখল করে নিয়েছে সন্ত্রাসীরা। এ জমির ওপর হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ থাকা সত্ত্বেও দখলদাররা স্থাপনা নির্মাণ করেই চলছে। এ বিষয়ে গত ৩ ফেব্রুয়ারি জমির অন্যতম মালিক মো. আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে রামপুরা থানায় ৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ২৫-৩০ জনের নামে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এরপরও সন্ত্রাসীরা বহাল তবিয়তে থেকে জমিতে টিনসেড ঘর ও ক্লাব নির্মাণ করছে। জমিতে দখলকৃতদের নামে একাধিক সাইনবোর্ড বসানো হয়েছে। এর মধ্যে ওই জমির বিদ্যুত্ ও পানির লাইন কেটে দিয়েছে তারা। স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন, ২০-৩০ জন অচেনা যুবক ওই জমির পাহারায় থাকে। তাদের ভয়ে এলাকাবাসী ও জমির মালিক তটস্থ।
এদিকে রামপুরা থানায় দায়েরকৃত অভিযোগে বলা হয়, গত ২ ফেব্রুয়ারি সকাল ৯টার দিকে শামসুল হক, সিরাজুল হক জুয়েল, মনিরুল হক, জামাল উদ্দিন খান, রশিদ উদ্দিন খানসহ ২০-৩০ যুবক জমি দখল করে এবং বাড়িতে ভাংচুর চালায়। এতে দুই লাখ টাকার সম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলে বাদী তার আর্জিতে উল্লেখ করেছেন। এতে আরও বলা হয়, সন্ত্রাসীরা জমি ও বাড়ির মালিকের কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। অন্যথায় জমি দখল ছাড়া হবে না বলে জানিয়ে দেয়। জমির মালিক মো. হারুনুর রশিদ ও আবুল হাশেম অভিযোগ করে বলেন, ওয়ারিশ সূত্রে পাওয়া ৬৬ শতাংশ জমিতে গত ৪৫ বছর ধরে বসবাস ও বাড়ি ভাড়া দিয়ে আসছি। সম্প্রতি স্থানীয় আওয়ামী লীগ পরিচয়দানকারী কতিপয় সন্ত্রাসী জমি দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করছে। আমরা প্রাণহানির ভয়ে জমির কাছে যেতে পারছি না। তারা আমাদের বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। পুলিশ জমি উদ্ধারে আমাদের সহযোগিতা করছে না, উল্টো দখলদারদের দায়ের করা মিথ্যা মামলায় রমনা থানা পুলিশ আমাদের হয়রানি করছে। তারা আরও বলেন, এ জমির বিষয়ে এক পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতে রামপুরা থানার এএসআই মো. রফিকুল ইসলাম তার প্রতিবেদনে এই জমির প্রকৃত মালিক আমরা বলে আদালতকে জানান। তারপরেও আমরা জমির কাছে যেতে পারছি না। এ বিষয়ে তারা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এদিকে জমির মালিক দাবিদার অপরপক্ষ মো. জামাল উদ্দিন খানকে ফোন করা হলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর নিজের পরিচয় গোপন করেন এবং কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। জমির অপর মালিক মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, ক্রয় সূত্রে এই জমির মালিক আমরা। উচ্চ আদালতের কোনো রায় আমরা পাইনি। তবে স্থাপনা নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি

No comments:

Post a Comment