Wednesday 23 February 2011

বগুড়ায় আওয়ামী লীগ নেতাদের রেলের জায়গা দখল অব্যাহত


আসাদুজ্জামান ফিরোজ, বগুড়া

দীর্ঘদিন থেকে বেদখলে রয়েছে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের হাজার হাজার একর জমি। পাশাপাশি দখল প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। দখলদারদের মধ্যে বেশিরভাগ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা। বর্তমানে বগুড়ায় আওয়ামী লীগ নেতারা একের পর এক রেলের জায়গা দখল করে চলেছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগ বলছে, দখল হওয়া জমি উদ্ধারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তবে একটি সূত্র জানিয়েছে, এ জায়গা দখলে রাজনৈতিক দল জড়িত থাকায় অভিযোগ দিয়েও কোনো কাজ হচ্ছে না।
রেলের জমি দখলের বেশিরভাগ ঘটনা ঘটেছে পাবনার ঈশ্বরদী, বগুড়া সদর, সান্তাহার, গাইবান্ধার বোনারপাড়া, রংপুরের কাউনিয়া, লালমনিরহাট, দিনাজপুর সদর, পার্বতীপুর, জয়পুরহাট ও আবদুল্লাপুর এলাকায়। রেল বিভাগ এ জমিগুলো পুনরুদ্ধারে তদন্ত কমিটি গঠন করে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনার পরও দখলে নিতে পারেনি। বর্তমানে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর রেল বিভাগের কিছু জমি নতুন করে দখল প্রক্রিয়া শুরু হয়। দখলকারীরা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী বলে নিজেদের পরিচয় দিলেও দলীয় সূত্রে ঘটনাকে অস্বীকার করে বলা হয় দখলকারীরা দলের কেউ নয়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর বগুড়া শহরের সেউজগাড়ী, স্টেশন রোড ও সরকারি আযিযুল হক কলেজের (নতুন ভবন) সামনের কামারগাড়ী রেলক্রসিংয়ে মূল্যবান জায়গা দখল করা হয়। সেউজগাড়ী এলাকায় রেল স্টেশনের পশ্চিম পাশে বগুড়া শহর স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার ভাই পরিচয় দিয়ে জায়গা দখল করা হয়। সমপ্রতি সরকারি আযিযুল হক কলেজের সামনে শ্রমিকলীগের এক নেতা জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করছেন। এছাড়া স্টেশনের পূর্বে লাইনের দু’ধারে চেলোপাড়ার ব্রিজ পর্যন্ত দখল করে বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা পশরা বসিয়েছে, যা ট্রেন চলাচলে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। শহরের সেউজগাড়ী, বাদুরতলা ও চকসূত্রাপুর এলাকার চিহ্নিত কিছু যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও শ্রমিকলীগ নেতা এ জমি দখল করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা দাবি করছেন, দখলকারীরা দলের কেউ নয়। দলের কেউ এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বগুড়া সরকারি আযিযুল হক বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, কলেজের সামনের রেলের জায়গা আওয়ামী লীগের নেতারা দখল করে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ করছে। ফলে কলেজবাস ও শিক্ষার্থীদের প্রবেশদ্বার ছোট হয়ে আসছে। শুধু তাই নয়, এ কারণে ইভটিজিং বেড়ে যাবে। বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হবে শিক্ষার্থীরা। অথচ রেলের সম্পত্তি অবৈধভাবে দখল করলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নীরব ভূমিকা পালন করছে।

No comments:

Post a Comment