Monday 26 July 2010

ভারত থেকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত্ আনতে ৩৫ বছরের সঞ্চালন চুক্তি : ভারতের অংশের সঞ্চালন লাইন নির্মাণের খরচও বহন করতে হবে বাংলাদেশকে

ভারত থেকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত্ আনতে ৩৫ বছরের সঞ্চালন চুক্তি : ভারতের অংশের সঞ্চালন লাইন নির্মাণের খরচও বহন করতে হবে বাংলাদেশকে
বিশেষ প্রতিনিধি
ভারত থেকে বিদ্যুত্ আমদানি করতে গতকাল সঞ্চালন চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছে। ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত্ আমদানির লক্ষ্যে ৩৫ বছর মেয়াদি এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় পাওয়ার গ্রিড কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া লি. (পিজিসিআইএল) ও বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (বিপিডিবি) মধ্যে। গতরাতে অনুষ্ঠিত চুক্তিস্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, এ চুক্তি দু’দেশের পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে মাইলফলক। চুক্তি অনুযায়ী ভারতের অংশে বাহারামপুর পর্যন্ত প্রায় ৮০ কিলোমিটার এবং বাংলাদেশ অংশে ভেড়ামারা পর্যন্ত প্রায় ৪০ কিলোমিটার নতুন সঞ্চালন লাইন এবং বিশেষ ধরনের সাবস্টেশন ও সুইচিং স্টেশন নির্মাণ করা হবে। ভারতের অংশের সঞ্চালন লাইন, সুইচিং স্টেশন স্থাপনসহ পুরো খরচ বহন করবে বাংলাদেশ। দু’দেশে অবকাঠামো নির্মাণ খাতে বাংলাদেশের ১১শ’ কোটি টাকার বেশি খরচ হবে বলে অনুষ্ঠানে উপস্থিত পিডিবি’র এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন। ভারতের অংশে ৮০ কিলোমিটার বিদ্যুত্ সঞ্চালনের খরচ বা হুইলিং চার্জ নির্ধারণ করবে ভারতের কেন্দ্রীয় ইলিক্ট্রিসিটি রেগুলেটরি কমিশন। ২০১২ সাল নাগাদ ভারত থেকে বিদ্যুত্ পাওয়া যাবে বলে অনুষ্ঠানে জানান প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী।
চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে ভারত সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত থেকে বিদ্যুত্ আমদানির ব্যাপারে সেদেশের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে এমওইউ স্বাক্ষর করেন। তার ধারাবাহিকতায় গতকাল চূড়ান্ত সঞ্চালন চুক্তি স্বাক্ষরিত হলো। বাংলাদেশের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন পিডিবি’র সচিব আজিজুল ইসলাম। ভারতের পক্ষে স্বাক্ষর করেন পিজিসিআইএলের নির্বাহী পরিচালক (বাণিজ্য) অরুণ কুমার। বিদ্যুত্ সচিব আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে চুক্তিস্বাক্ষর অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন জ্বালানি সচিব মেজবাহ উদ্দিন, ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশনের ডেপুটি হাইকমিশনার। পিডিবি চেয়ারম্যান এসএম আলগীর কবির অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন।
চুক্তি অনুযায়ী ট্রান্সমিশন লাইন নির্মাণ সম্পন্ন হলে প্রথমে ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুত্ আমদানি করা হবে। পর্যায়ক্রমে তা ৫০০ মেগাওয়াটে উন্নীত হবে। তবে কখনও বাংলাদেশে বিদ্যুত্ উদ্বৃত্ত হলে এবং ভারতে চাহিদা থাকলে একই সঞ্চালন লাইনে বাংলাদেশ বিদ্যুত্ রফতানিও করতে পারবে। ভারতের অংশে নির্মিত সঞ্চালন লাইনের খরচ কে বহন করবে তা নিয়ে মতবিরোধ চলছিল। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ ওই খরচ বহনে সম্মত হওয়ায় চুক্তি স্বাক্ষরিত হলো। ভারতের অংশে ৮০ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন নির্মাণে ঠিক কত টাকা ব্যয় হবে তা পিডিবি কর্মকর্তারা জানাতে পারেননি। তবে তারা বলেন, সরকারের উচ্চপর্যায়ে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশ অংশে ৪০০ কেভি ক্ষমতার সঞ্চালন লাইন, সাবস্টেশনসহ আনুষঙ্গিক অবকাঠামো নির্মাণ কাজে কমপক্ষে ১ হাজার ৫০ কোটি টাকা লাগবে বলে জানা গেছে।
চুক্তি অনুযায়ী ভারত থেকে বিদ্যুত্ আমদানি শুরু হলে পিডিবি মাসিক ভিত্তিতে বিল পরিশোধ করবে। বিল করার ৬০ দিনের মধ্যে পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে বিলম্বজনিত সুদসহ পরিশোধ করতে হবে।

http://www.amardeshonline.com/pages/details/2010/07/27/36383

No comments:

Post a Comment